ডায়াবেটিস আলুডায়াবেটিস একটি জটিল অসুখ। আর এই রোগে আক্রান্ত হলে আলুর থেকে দূরে চলে যান অনেকে। কিন্তু প্রশ্ন হল, ডায়াবেটিসে আলু খাওয়া কি একবারেই চলবে না? তাতে কি শরীরের বড় ক্ষতি হতে পারে? নাকি কোনও একটা বিশেষ পদ্ধতিতে ডায়াবেটিসেও আলু খাওয়া যায়? আর সেই উত্তরটাই দিলেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডাঃ আশিস মিত্র।
ডায়াবেটিস কেন আলু খেতে নেই?
ডাঃ মিত্র বলেন, 'এভাবে কোনও খাবারকে বাদের তালিকায় রাখা হয় না। তবে আলু খেলে যে সুগার বাড়তে পারে, এই কথাটা সত্যি। আসলে আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেকটাই বেশি। যার ফলে আলু খেলে চট করে রক্তে সুগার লেভেল বেড়ে যেতে পারে। আর সেটাই শরীরের হাল বিগড়ে দেওয়ার রাখে ক্ষমতা। তাই ডায়াবেটিসে সাধারণত আলু খেতে বারণ করা হয়।'
তবে যারা একান্তই আলু খেতে চান, তাদেরও পথ দেখালেন ডাঃ মিত্র।
কীভাবে আলু খেলে ক্ষতি হবে না?
'আলুটা ভালো করে সিদ্ধ করে নিন। তারপর সেটিকে ফ্রিজে ঢুকিয়ে দিন। সে দিন আর আলুটা খাবেন না। পরের দিন সেটা বের করে রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন। অথবা আলু ভাতের মতো মেখে খেতে পারেন। তাতে বিপদের আশঙ্কা কম। কারণ, এভাবে আলু খেলে তার কার্বোহাইড্রেটের চরিত্র বদলে যায়। যার ফলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেকটাই যায় কমে। তাতে সুগার বাড়ার আশঙ্কা থাকে কম।', এমনটাই ব্যাখ্যা দিলেন ডাঃ মিত্র।
এভাবে আলু খেলেই বিপদ
ডাঃ মিত্রের মতে, অনেকেই আলু ভাজা খেতে খুব ভালোবাসেন। এমনকী ডায়াবেটিস নিয়েও আলু ভেজে খান। আর সেটাই বিপদ বাড়ায়। কারণ, আলু এমনিতেই গ্লুকোজ লেভেল বাড়াতে পারে। তার উপর সেটা যদি ভেজে খাওয়া হয়, তাহলে শরীরের হাল আরও বিগড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। এমনকী সুগার বাড়ার পাশাপাশি হার্টও খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই সাবধান হতে হবে। চেষ্টা করতে হবে যেভাবেই হোক আলু ভাজা না খাওয়ার।
পরিমাণটা মাথায় রাখুন
দিনে একটা ছোট টুকরোর বেশি আলু খাবেন না। আর আলুর সঙ্গে অন্যান্য সবজি এবং শাকও খান। তাতেও সুগার বাড়ার আশঙ্কা কমবে। আপনার শরীর থাকবে সুস্থ।
রাঙা আলু খান
ডাঃ মিত্র বলেন, 'অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি হল রাঙা আলু। এতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার। পাশাপাশি এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও অনেকটাই কম। তাই নিয়মিত রাঙা আলু খেলে সুস্থ থাকবেন। সুগার বাড়ার আশঙ্কা খুব একটা থাকবে না।'
পরিশেষে তিনি জানান, ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত সুগার মাপতে হবে। পাশাপাশি ডায়েটে নজর রাখা জরুরি। এছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। তাহলেই সুস্থ থাকতে পারবেন।
বিদ্র: এই প্রতিবেদটি সচেতনতার উদ্দেশ্য নিয়ে লেখা হয়েছে। কোনও ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই নিজের চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।