Wolbachia Method To Control Mosquito Borne Diseases: বাংলায় ডেঙ্গি (Dengue) পরিস্থিতি ক্রমশ উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। গত সপ্তাহেও এ রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তর সংখ্যা বেড়েছে। গত সপ্তাহে এ রাজ্যে ১,৩৫০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে বাংলায় সবচেয়ে এগিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা। গত সপ্তাহে এই জেলার আক্রান্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪০০। নদিয়ায় গত সপ্তাহে ৩৫০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। হুগলিতে এক সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫ জন। এ বছর এখনও পর্যন্ত এই রাজ্যে মোট ডেঙ্গি আক্রান্তর সংখ্যা ৫,৭৫১।
বিশেষ মশার সৃষ্টি
তবে শীঘ্রই মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গি-চিকুনগুনিয়া থেকে মুক্তি মিলতে চলেছে। কারণ, বিজ্ঞানীরা পরীক্ষাগারে এমন এক ধরনের 'বিশেষ মশা' তৈরি করেছেন যা ডেঙ্গি-চিকুনগুনিয়ার ভাইরাস ছড়ানো মশাকে গোড়া থেকেই নির্মূল করবে।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR) পরীক্ষাগারে এমন বিশেষ স্ত্রী মশা (মশকি) তৈরি করেছে যাদের লার্ভা থেকে জন্ম নেওয়া মশার শরীরে ডেঙ্গি-চিকুনগুনিয়ার ভাইরাস থাকবে না। ICMR-VCRC-এর ডিরেক্টর ডাঃ অশ্বিনী কুমার জানিয়েছেন যে, বিজ্ঞানীরা একটি বিশেষ ধরনের মশা তৈরি করেছেন যা ধীরে ধীরে ডেঙ্গি এবং চিকুনগুনিয়া দূর করবে।
ICMR-VCRC-এর ডিরেক্টর বলেন, “আমরা এমন স্ত্রী মশা পরিবেশে ছেড়ে দেব যা পুরুষ মশার সংস্পর্শে এসে এমন লার্ভা তৈরি করবে, যাতে ডেঙ্গি-চিকুনগুনিয়ার ভাইরাস থাকবে না। আমরা মশা আর ডিম প্রস্তুত করে রেখেছি এবং যে কোনও সময় এগুলি ছেড়ে দিতে পারি।”
ওলবাচিয়া মেথড
এ বছরেই কেন্দ্র সরকার ডেঙ্গি মোকাবেলায় DNDI ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের (Drugs for Neglected Diseases Initiative) সঙ্গে এই নিয়ে চুক্তি করেছে৷ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ভাইরাসের দাপট কমাতে সাহায্য করছে ব্যাকটেরিয়া। ওলবাচিয়া (Wolbachia) নামের ব্যাকটেরিয়াকে ডেঙ্গি-চিকুনগুনিয়ার ভাইরাস প্রতিরোধে কাজে লাগানো হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে পরীক্ষাগারে মশার শরীরে প্রবেশ করানো হয়েছে ওলবাচিয়া ব্যাকটেরিয়া। এই সব মশার সঙ্গে বাইরের পরিবেশে থাকা স্ত্রী মশার সংসর্গ ঘটার ফলে উৎপাদিত ডিমে ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়ার মতো ভাইরাস থাকছে না। এই পদ্ধতিকে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘ওলবাচিয়া মেথড’।
ওলবাচিয়া পদ্ধতিতে সাফল্যের সম্ভাব্য হার
বিশ্বের ১২টি দেশে ইতিমধ্যেই স্বাভাবিক পরিবেশে ওলবাচিয়া বাহিত বিশেষ মশা ছেড়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, ডেঙ্গি-চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ ছড়ানোর প্রবণতা ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে গিয়েছে। ফলে আগামী দিনে ডেঙ্গি-চিকুনগুনিয়ার মতো অধিকাংশ মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ করতে কার্যকর হবে ‘ওলবাচিয়া মেথড’।