Lip fillers and beauty obsession: পাতলা ঠোঁট পুরুষ্টু করার হিড়িক, 'লিপ ফিলারে' সৌন্দর্য, না বিপদের বার্তা?

বর্তমান যুগে সৌন্দর্য যেন শুধু নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর মাধ্যম নয়, বরং একটি সামাজিক মাপকাঠি। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নিজের শরীর এবং মুখাবয়ব নিয়ে অতিরিক্ত সচেতনতা চোখে পড়ার মতো। সেই সচেতনতা থেকেই ঠোঁট মোটা করার জনপ্রিয় পদ্ধতি “লিপ ফিলার” আজকাল ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে — বিশেষত মেয়েদের মধ্যে। কিন্তু সৌন্দর্য অর্জনের এই প্রচেষ্টা কি সর্বদা নিরাপদ?

Advertisement
পাতলা ঠোঁট পুরুষ্টু করার হিড়িক, 'লিপ ফিলারে' সৌন্দর্য, না বিপদের বার্তা?ঠোক ফিলার।-মেটা এআই ছবি
হাইলাইটস
  • বর্তমান যুগে সৌন্দর্য যেন শুধু নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর মাধ্যম নয়, বরং একটি সামাজিক মাপকাঠি।
  • বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নিজের শরীর এবং মুখাবয়ব নিয়ে অতিরিক্ত সচেতনতা চোখে পড়ার মতো।

বর্তমান যুগে সৌন্দর্য যেন শুধু নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর মাধ্যম নয়, বরং একটি সামাজিক মাপকাঠি। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নিজের শরীর এবং মুখাবয়ব নিয়ে অতিরিক্ত সচেতনতা চোখে পড়ার মতো। সেই সচেতনতা থেকেই ঠোঁট মোটা করার জনপ্রিয় পদ্ধতি “লিপ ফিলার” আজকাল ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে — বিশেষত মেয়েদের মধ্যে। কিন্তু সৌন্দর্য অর্জনের এই প্রচেষ্টা কি সর্বদা নিরাপদ?

সম্প্রতি অভিনেত্রী উরফি জাভেদের ঠোঁট ও মুখে অস্বাভাবিক ফোলাভাবের ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। জানা যায়, ৯ বছর পর লিপ ফিলার সরানোর পর তার মুখের এমন অবস্থা হয়েছে। এই ঘটনাকে ঘিরে পুনরায় প্রশ্ন উঠেছে: ঠোঁট ফিলার আসলে কতটা নিরাপদ?

লিপ ফিলার কী?
ফোর্টিস হাসপাতালের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ শ্বেতা শ্রীধরের মতে, লিপ ফিলার হলো এক ধরনের নন-সার্জিকাল কসমেটিক ট্রিটমেন্ট, যা ঠোঁটের আকার ও ভলিউম বাড়াতে ব্যবহৃত হয়। এটি মূলত হায়ালুরোনিক অ্যাসিড দিয়ে তৈরি — একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা শরীরেই বিদ্যমান।

ডাঃ গৌরাঙ্গ কৃষ্ণ বলেন, এই ফিলারগুলি ডার্মাল ফিলারের আওতাভুক্ত এবং নিরাপদ বলে স্বীকৃত। FDA অনুমোদিত হওয়ায় এগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই কার্যকর হয়।

কারা এই পদ্ধতি নিচ্ছেন?
ভারতে ১৮-৪৯ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে ঠোঁট ফিলার নেওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি, যদিও ধীরে ধীরে পুরুষরাও এই দিকে ঝুঁকছেন। ২০২৩ সালের এক জরিপ অনুসারে, ১৮-২৯ বছর বয়সী ২০.১ শতাংশ এবং ৪০-৪৯ বছর বয়সী ৪৫.২ শতাংশ মানুষ ফিলার ব্যবহার করেছেন।

ডাঃ কুলদীপ সিং জানিয়েছেন, যারা তাদের ঠোঁটের আকার পরিবর্তন করতে চান অথবা ঠোঁট পাতলা হওয়ার কারণে আত্মবিশ্বাসের অভাব অনুভব করেন, তারাই মূলত এই পদ্ধতি নেন।

বাজারের আকার ও বিস্তার
ফিউচার মার্কেট ইনসাইটস অনুযায়ী, ২০২৩ সালে লিপ ফিলারের বৈশ্বিক বাজার ছিল ৪৩০৭ কোটি, যা ২০৩৪ সালের মধ্যে পৌঁছাবে প্রায় ৬৩৭৮ কোটিতে। ভারতে বাজার ২০০০ সালের পর থেকে প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে।

Advertisement

সোশ্যাল মিডিয়া, ইনফ্লুয়েন্সার কালচার, ফিল্টার-নির্ভর সৌন্দর্যের সংজ্ঞা এবং তারকাদের প্রভাবেই এই প্রবণতা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, ব্রাজিল, তুরস্কের মতো দেশগুলিতেও এই চিকিৎসার চাহিদা তুঙ্গে।

চিকিৎসা পদ্ধতি ও খরচ
লিপ ফিলার একটি ছোট এবং নিরাপদ পদ্ধতি। এটি করতে ১৫-২০ মিনিটের বেশি সময় লাগে না। প্রক্রিয়ার আগে কোনও বড় প্রস্তুতির দরকার হয় না এবং ১-২ দিনের মধ্যে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়া যায়।

ভারতে এই চিকিৎসার খরচ শহর ও ডাক্তারভেদে আলাদা। সাধারণত ২৫,০০০ থেকে ৩৫,০০০-এর মধ্যে পড়ে। তবে বাজারে নিম্নমানের চিনা ব্র্যান্ডের ফিলার কম দামে পাওয়া গেলেও, সেগুলিতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে।

কারা করতে পারবেন না?
এই চিকিৎসা সবার জন্য নয়। যাদের রক্তপাতজনিত সমস্যা, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা যেকোনো দীর্ঘস্থায়ী রোগ আছে, তাদের জন্য এই পদ্ধতি উপযুক্ত নয়।

এছাড়া, যারা বডি ডাইমরফিক ডিসঅর্ডারে ভুগছেন — অর্থাৎ যারা অবাস্তব সৌন্দর্যের মানদণ্ডে নিজেদের বারবার খারাপ মনে করেন — তাদের জন্য চিকিৎসকেরা এই ট্রিটমেন্ট না করার পরামর্শ দেন।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী কী?
যদিও ঠোঁট ফিলার তুলনামূলকভাবে নিরাপদ, তবুও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে:
সাময়িক ফোলাভাব, ব্যথা বা ইনজেকশনের স্থানে রক্তপাত। ঠোঁটের রঙ পরিবর্তন বা শক্ত হয়ে যাওয়া। ভুল ইনজেকশনের ফলে টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। ঠোঁটের অসম আকৃতি।

 

POST A COMMENT
Advertisement