উচ্চ রক্তচাপের মতো, নিম্ন রক্তচাপও খুব বিপজ্জনক হতে পারে। নিম্ন বা উচ্চ রক্তচাপের কারণে হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক ও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের মধ্যে রক্ত চলাচলে সমস্যা হয়। ১২০ মিমি এইচজির কম এবং ৮০ মিমি এইচজির বেশি রক্তচাপকে স্বাভাবিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মানুষের রক্তচাপের সমস্যা খুবই সাধারণ হয়ে উঠেছে। তাই এটা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় সবারই জানা উচিত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে যদি ক্লান্তি, হালকা মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, ঝাপসা দৃষ্টির মতো সমস্যা অনুভব করেন, তাহলে অবশ্যই রক্তচাপ পরীক্ষা করা উচিত। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলা উচিত। নিম্ন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চিকিৎসকেরা কিছু খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।
স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস
ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ এবং ডিনারে মধ্যে যে ব্যবধান থাকে, তখন হালকা স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস দিয়ে পূরণ করতে হবে। লো ব্লাড প্রেশারের সমস্যা এড়াতে দিনে অল্প অল্প করে কিছু না কিছু খেতে হবে। তিন বেলা পেট ভরে খাওয়ার পরিবর্তে পাঁচবার অল্প করে খাবার খান। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও খুব উপকারী হতে পারে।
নোনতা খাবার
অত্যধিক নুন শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তবে সুষম পরিমাণে এটি আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিনের খাবারে অবশ্যই এক চা চামচ লবণ থাকতে হবে। সবজি বা ফলের সঙ্গে খেলে ভাল হবে। প্রতিদিন ব্যায়াম করলে গ্রীষ্মকালে এক চিমটি নুন দিয়ে লেবু জল খেতে পারেন। এরপ্র শরীরের ক্লান্তি কমে যাওয়ার পাশাপাশি রক্তচাপের সমস্যা বাড়িতে পারে।
পানীয়
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দিনে দুই থেকে তিন লিটার জল পান করার পরামর্শ দেন। নিম্ন রক্তচাপের জন্য আপনি ডায়েটে নারকেল জল এবং আম পান্নার মতো জিনিসগুলিও অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এগুলি আপনার শরীরে তরল ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইট সরবরাহ করবে। ডিহাইড্রেশন নিম্ন রক্তচাপের একটি সাধারণ সমস্যা। সেক্ষেত্রে ডালিমের জ্যুসও পান করতে পারেন। এতে উপস্থিত পলিফেনল নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট নিম্ন রক্তচাপে উপকারী।
ক্যাফেইন
চা বা কফির মতো ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়ও কিছু সময়ের জন্য নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। আপনার রক্তচাপ হঠাৎ কমে গেলে এক কাপ চা বা কফি শরীরে রক্ত চলাচলের উন্নতি ঘটাতে পারে। অল্প সময়ের জন্য হলেও খুব দ্রুত এর প্রভাব দেখাতে পারে।
তুলসী পাতা
নিম্ন উচ্চচাপে তুলসী পাতার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। চিকিৎসকেরা বলেন, রোজ ৫-৬টি তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া উচিত। পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা শরীরের রক্তকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত ইউজেনল নামক একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে খুবই সহায়ক।
বাদাম দুধ
৫-৬ টি বাদাম রাতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খোসা ছাড়িয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে কিছু পানীয়তে ফুটিয়ে নিন। প্রতিদিন এটি পান করলে রক্তচাপ কখনই কমবে না। বাদাম দুধে কোলেস্টেরল এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে না। এটি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। নিম্ন রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন যারা, তারা এটি খেতে পারেন।
কিশমিশ
এই সমস্যায় কিশমিশ খুবই উপকারী। সামান্য পরিমাণ কিশমিশ সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে দুধ দিয়ে সিদ্ধ করুন। প্রতিদিন সকালে এই পানীয়টি পান করলে নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা হবে না। আপনি চাইলে ব্রেকফাস্টে এটি খেতে পারেন। এটি নিম্ন রক্তচাপ এবং রক্ত চলাচল উভয়ের জন্যই উপকারী।