আমলকী আমলকীকে সুপারফুড বলে মনে করা হয় এবং এর অনেক কারণ রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে এবং এটি হজম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ত্বকের জন্য উপকারী। সহজেই রস, আচার, গুঁড়ো করে খাওয়া যায় আমলকী। তবে অনেকের অজানা, আমলকী সবার জন্য উপকারী নয়। স্বাস্থ্যকর হলেও, কিছু মানুষের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে আমলকী।
গবেষণায় দেখা গেছে, আমলকীতে কিছু প্রাকৃতিক যৌগ রয়েছে যা সংবেদনশীল ব্যক্তিদের মধ্যে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া, চুলকানি বা ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে। কিছু মানুষের আমলকী খেলে শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। এর অর্থ হল, আমলকী সুপারফুড হলেও এটি সবার জন্য নয়। এটি খাওয়ার আগে শরীর এবং স্বাস্থ্যের অবস্থা বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জেনে নিন কাদের জন্য আমলকী রোগ সৃষ্টিকারী খাবার হতে পারে।
আমলকী কাদের জন্য ক্ষতিকারক?
* আমলকী রক্তে শর্করার পরিমাণ আরও কমাতে পারে। যদি আপনার শরীরে শর্করার মাত্রা দ্রুত কমে যায়, মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা অনুভব করেন, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আমলকী খাওয়া এড়িয়ে চলুন। এটি অবস্থার আরও অবনতি ঘটাতে পারে।
* যাদের পেটে সংবেদনশীলতা রয়েছে, তাদের জন্য আমলকী কখনও কখনও অস্বস্তিকর হতে পারে। যেহেতু আমলকী অত্যন্ত টক এবং অ্যাসিডিক, তাই এটি অ্যাসিডিটি, অম্বল, গ্যাস, ফোলাভাব এবং পেটে ব্যথার কারণ হতে পারে। যদি আপনার আলসার, গ্যাস্ট্রাইটিস বা অ্যাসিড রিফ্লাক্স থাকে, তাহলে খালি পেটে কাঁচা আমলকী খাওয়া এড়িয়ে চলাই ভাল।
* আমলকী নিজেই রক্ত পাতলা করে। যদি আপনি ওয়ারফারিন, অ্যাসপিরিন বা ক্লোপিডোগ্রেলের মতো ওষুধ খান, তাহলে আমলকী রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। যাদের রক্তপাতের সমস্যা আছে তাদেরও সতর্কতার সঙ্গে এটি ব্যবহার করা উচিত।
* আমলকীতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরে অক্সালেট তৈরি করে। এই অক্সালেট কিডনিতে পাথর তৈরিতে অবদান রাখতে পারে। যদি আপনার অতীতে কিডনিতে পাথর হয়ে থাকে বা কিডনি দুর্বল থাকে, তাহলে প্রচুর পরিমাণে আমলকী খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
* আমলকী সাধারণত গর্ভবতী এবং সন্তানকে স্তন দুগ্ধ খাওয়ান, এরকম মহিলাদের অল্প পরিমাণে খাওয়া নিরাপদ। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে পেট খারাপ হতে পারে। অতিরিক্ত আমলকী খাওয়ার ফলে পেট খারাপ, ডায়রিয়া বা পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে। উচ্চ মাত্রায়, বিশেষ করে সম্পূরক আকারে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়।
* অনেকের আমলকীতে অ্যালার্জি হতে পারে বা তারা সংবেদনশীল হতে পারে। চুলকানি, ফুসকুড়ি, ফোলাভাব, বমি বমি ভাব বা পেট ব্যথার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যদি আপনি এই লক্ষণগুলির কোনওটি অনুভব করেন, তাহলে অবিলম্বে আমলকী খাওয়া বন্ধ করুন।
আমলকী খুবই উপকারী, তবে সবার জন্য নয়। যদি আপনার উপরে উল্লিখিত কোনও অবস্থা থাকে, তাহলে খুব বেশি পরিমাণে আমলকী খাবেন না, বা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এটি আপনার শরীরের জন্য সঠিক কিনা তা জেনে তবেই খাওয়া।