বিরিয়ানি দেখলেই এত লোভ লাগে কেন?বিরিয়ানি, ফিস ফ্রাই, মাটন কষা বা গরম গরম কচুরির মতো খাবার... লেখাটা পড়েই নিশ্চই জিভে জল আসছে? কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন যে সুস্বাদু খাবার খাওয়ার সময় মন এত আনন্দে ভরে যায় কেন? এর পেছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কারণ। সুস্বাদু খাবার শুধুমাত্র আমাদের জিভের স্বাদ ইন্দ্রিয়কে নয়, আমাদের মস্তিষ্ককেও তৃপ্ত করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে সুস্বাদু খাবার আমাদের মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে।
জীববিজ্ঞানের ভাষায়, সুস্বাদু খাবার আমাদের ব্রেনের ডোপামিন নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। ডোপামিনকে বলা হয় 'হ্যাপি হরমোন'। এটি আমাদের মস্তিষ্কে আনন্দ এবং সন্তুষ্টির অনুভূতি বাড়ায়।
বিরিয়ানি বা মাটনের ঝোল-ভাতের মতো খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিন থাকে। এই উপাদানগুলি একসঙ্গে কাজ করে আমাদের মস্তিষ্কে রিওয়ার্ড সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে। এর ফলে আমরা সেই খাবার বারবার খেতে চাই।
সুস্বাদু খাবারের একটি বড় আকর্ষণ হল তার গন্ধ। বিরিয়ানির দোকানের সামনে দিয়ে গেলেই তার সুগন্ধ কেমন টানে দেখেছেন? আসলে খাবারের সুগন্ধ আমাদের স্মৃতির সঙ্গে যুক্ত থাকে। যেমন ধরুন, গরম ফিস ফ্রাইয়ের গন্ধ হয়তো কারও শৈশবের কোনও সুন্দর মুহূর্ত মনে করিয়ে দেয়।
আজকাল আবার সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাবও আছে। ফুড ভ্লগার বা বন্ধুকেই কোনও সুস্বাদু খাবারের ছবি-ভিডিও পোস্ট করতে দেখে আপনারও মনে সেই খাবার খাওয়ার ইচ্ছা জাগে।
বিরিয়ানি বা মাটন কষার মতো মশলাদার খাবার আমাদের জিভের রিসেপ্টরগুলোকে উদ্দীপিত করে। মশলার ঝাঁঝ আমাদের ব্রেনকে সক্রিয় করে তোলে, যার ফলে আমরা সেই খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হই।
এই ধরনের খাবার মস্তিষ্কে ডোপামিন নিঃসরণ বাড়ায়। কিন্তু অতিরিক্ত তেল-মশলাযুক্ত খাবার দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যহানি ঘটাতে পারে। এটি স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের কারণ হতে পারে। আবার ব্রেনে সুখের হরমোন ট্রিগার করায়, অনেকে মন খারাপ বা স্ট্রেস কাটাতে নিজের অজান্তেই এই ধরনের খাবার বেশি খেয়ে ফেলেন। এমনটা করলে কিন্তু ভুঁড়ি হতে বাধ্য।
তাহলে বুঝলেন তো, বিরিয়ানি বা ফিস ফ্রাইয়ের মতো সুস্বাদু খাবার খেলে এত আনন্দ হয় কেন? আসলে এটা আমাদের মস্তিষ্কের রিওয়ার্ড সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে। তবে মনে রাখবেন, এতে আপনাকেই নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। স্বাস্থ্য ভাল রাখতে খাওয়াদাওয়ায় ব্যালেন্স রাখাটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।