দেখতে অনেকটা শোল মাছের মতো। তবে পিঠের পাখনা অনেকটা বড়, শক্ত কাঁটা তোলা কড়াতের মতো! তবে শোল ভেবে ভুল করলেই বিপদ! কারণ, মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদীতে এ মাছের বসবাস। ব্রাজিল বা পেরুর জলাসয়েও এই মাছের দেখা পাওয়া যায়।
অস্বাভাবিক হারে এই মাছের সংখ্যা বেড়ে চলেছে উত্তরের পুকুর বা হ্রদের জলে। মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মাছ ভারতীয় মিঠে জলের মাছেদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত বিপজ্জনক! বছর দুয়েক আগে ডুয়ার্সের বামনি নদীতে এই মাছ ধরা পড়ে। বছর দেড়েক আগে মণিপুরের জলাশয়েও দেখা মেলে এই মাছের।
এই মাছকে আমাজন সেইলফিন ক্যাটফিস (Amazon Sailfin Catfish) বা সাকারমাউথ ক্যাটফিস বলেই চেনেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা। মাছটি লম্বায় প্রায় এক ফুট। এক একটির ওজন প্রায় ৩০০-৩৫০ গ্রাম। এই প্রজাতির মাছ খুব দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটায়। ফলে দ্রুত বিগড়ে যায় জলাশয়ের পরিবেশ ও বাস্তু। শুধু তাই নয়, অন্যান্য মাছের প্রজননেও বাধা সৃষ্টি করে এই আমাজন সেইলফিন ক্যাটফিস।
সমস্ত জলাশয়েরই নির্দিষ্ট একটি বাস্তুতন্ত্র রয়েছে। আমাজন সেইলফিন ক্যাটফিস সেই বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য দ্রুত বিগড়ে দিতে পারে। এর ফলে অনেক ছোট প্রজাতির মাছ অকালেই বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে! এমনটাই আশঙ্কা মৎস্য বিশেষজ্ঞদের! যেমন, ২০১৮-এ মাদুরাইতে সেইলফিন ক্যাটফিসের আগমনে জলের বাকি মাছদের মড়ক লেগেছিল।
এ বার প্রশ্ন হল, ব্রাজিল বা পেরুর জলাসয়ের মাছ উত্তরের নদীতে এল কী করে! মণিপুরের ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচার রিসার্চ’-এর (ICAR) গবেষকদের এর সঠিক উত্তর জানা নেই। অনেকের অনুমান, অনেকেই অ্যাকোরিয়ামে এই মাছ পোষেন ‘ক্রোকোডাইল ফিশ’ নামে। সেগুলিরই কোনও কোনওটা কোনও ভাবে স্থানীয় জলাশয়ে চলে গিয়ে থাকতে পারে!