স্বাধীনতার আগে কলকাতার সাথে শিলিগুড়িকে রেলপথের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করতে শিলিগুড়িতে তৈরি হয়েছিল টাউন। কিন্তু গত কয়েক দশক ধরে বেহাল জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে এই টাউন স্টেশন। সম্প্রতি বিশ্ব পর্যটন দিবসে টাউন স্টেশনকে তুলে ধরতে কর্মসূচি রাখা হয়েছিল পর্যটন সংস্থার তরফে।
তবে ঐতিহাসিক স্টেশনকে রক্ষার্থে রেলকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিল শিলিগুড়ি পুরনিগম। এবার এই ঐতিহাসিক টাউন রক্ষার্থে স্টেশনের বর্তমান অবস্থার পরিদর্শন করলেন রেলের উত্তর পূর্ব সীমান্তের কাটিয়া ডিভিশনের ডিআরএম এস কে চৌধুরী।
ভারতের স্বাধীনতার আগে ১৮৭৮ সালে রেলপথের মাধ্যমে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গর শিলিগুড়িকে জুড়তে তৎকালীন ব্রিটিশরা তৈরি করেছিল শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনকে। প্রথম অবস্থায় শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন থেকে কিশনগঞ্জ পর্যন্ত মিটারগেজ লাইন ধরে যেত যাত্রী নিয়ে চলাচল করত ট্রেন। এবং ন্যারো গেজ লাইনে ধরে গেলখোলা পর্যন্ত যেত তিস্তা ভ্যালি এক্সপ্রেস।
এর পর তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনকালে সমতল থেকে পাহাড়ে পণ্য সামগ্রী পৌঁছে দিতে ১৮৮০ সালে ২৩ শে আগস্ট শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন থেকে কার্শিয়াং পর্যন্ত প্রথম টয় ট্রেন চল শুরু করে।
পড়ে ১৮৮১ সালে ৪ ঠা জুলাই দার্জিলিং পর্যন্ত টয় ট্রেনের লাইনের কাজ সম্পন্ন হওয়ায় দার্জিলিং পর্যন্ত যাত্রা শুরু করে টয় ট্রেন। শুধু তাই নয় এই স্টেশনে পা রেখে মংপু গিয়েছিলেন কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই ঐতিহাসিক স্টেশনে পদধূলি পড়েছিল বাঘাযতীন, মহাত্মা গান্ধী, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ও নেতাজী ছাড়াও বহু মনীষীর।
এত মনীষীদের পদধূলি পড়া শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন আজ জরাজীর্ণ অবস্থায়। হেরিটেজ তকমা পাবার পরও আজও চরম অবহেলায় ঐতিহাসিক এই রেল স্টেশন। সম্প্রতি বিশ্ব পর্যটন দিবস এদিন স্টেশনকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে এবং পর্যটক সহ শিলিগুড়িবাসীকে স্টেশনের গুরুত্ব বোঝাতে ছোট্ট অনুষ্ঠান রাখা হয়েছিল।
সেদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শিলিগুড়ি পুরো নিগমের প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান গৌতম দেব জানিয়েছিলেন এই স্টেশনকে রক্ষার্থে রেলকে সর্বতোভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন পুরনিগমের বোর্ডের চেয়ারম্যান গৌতম দেব। তবে এবার ঐতিহাসিক এই স্টেশনকে রক্ষার্থে উদ্যোগী ভারতীয় রেল। তাই শুক্রবার শিলিগুড়ির ঐতিহাসিক টাউন স্টেশন পরিদর্শন করলেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম এস কে চৌধুরী।
টাউন স্টেশন পরিদর্শন শেষে সংবাদমাধ্যমে DRM বলেন, হেরিটেজ বিল্ডিং সাজানো হবে। এছাড়াও বাণিজ্যিক ভাবে স্টেশনকে উন্নয়ন করা হবে । এদিন তিনি স্টেশন চত্বর পরিদর্শন করে আরো বলেন, রেলের বেশ কিছু জমি দখল হয়ে রয়েছে সেই দখল হওয়া জমি উদ্ধার করে রেলের ভূমি দপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হবে। অন্যদিকে তিনি বলেন পুরনিগমের প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যানের প্রস্তাব এখনো আমার কাছে আসেনি।