ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা একেবারে নির্মূল করা যায় না। কিন্তু জীবনধারা পরিবর্তন করে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। মূলত ৩ ধরণের ডায়াবেটিস রয়েছে। টাইপ ১, টাইপ ২ এবং টাইপ ৩। শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে ডায়াবেটিসের সমস্যা হয়। এমন পরিস্থিতিতে ক্রমাগত রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করে, সময়মতো ওষুধ খেলে এবং প্রতিদিন ব্যায়াম করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলে, সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে রাতে ঘুমানো পর্যন্ত আপনার সমস্ত কাজে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। আপনিও যদি ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভোগেন আর তা নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তাহলে আমরা আপনাকে এমন কিছু রুটিন সম্পর্কে বলতে যাচ্ছি, যা আপনার প্রতিদিন অনুসরণ করা উচিত। আসুন জেনে নিই কী সেই বিশেষ রুটিন।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ ঘন ঘন তেষ্টা, প্রস্রাব, স্নায়ু ব্যথা এবং অনিয়ন্ত্রিত খিদের কারণে রাতের ঘুমের সমস্যায় ভোগেন। এই সমস্ত জিনিস থেকে মুক্তি পেতে আপনাকে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে। তবে আপনিও পরিত্রাণ পেতে পারেন ঘুমের সময় রুটিন করে কিছু জিনিস মেনে চললে। ভালো ঘুমের জন্য ডায়াবেটিস রোগীদের হালকা গরম জল দিয়ে স্নান করা প্রয়োজন।
রাতে ঘুমোনোর আগে ঘরের আলো কমিয়ে রাখুন এবং ফোনের স্ক্রিন যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করুন। এর পাশাপাশি ঘরে নীল আলো ব্যবহার না করা গুরুত্বপূর্ণ। ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস থেকে নির্গত নীল আলো মস্তিষ্ককে সংকুচিত করতে শুরু করে, যার কারণে আপনি দীর্ঘ সময় জেগে থাকেন। আপনার যদি রাতে ঘুমাতে সমস্যা হয়, তাহলে ঘরের তাপমাত্রা বজায় রাখাও জরুরি।
ডায়াবেটিস রোগীদের ঘুমের আগে খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ তাতে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। কিন্তু অনেক সময় ডায়াবেটিস রোগীদের রাতে খিদে পায়। যেকারণে অনেকের ঘুমও ভেঙে যায়। সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত।
দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলে স্নায়ু নষ্ট হতে শুরু করে। যার কারণে পায়ের সংবেদনশীলতা অনেকটাই কমে যায়। যা অনেক সময় মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। সংক্রমণ হলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া এবং রক্ত সঞ্চালনার দুর্বলতার কারণে সংক্রমণ সারানো যায় না। তাই রাতে ঘুমোনোর আগে পায়ের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।
চা-কফি ও অন্যান্য নেশা সন্ধ্যার পর থেকে এড়িয়ে চলুন। সন্ধের পর থেকে টিভি, মোবাইল ও কম্পিউটার ব্যবহার যতটা সম্ভব কম করুন।
নির্দিষ্ট সময়ে রোজ ঘুমোতে যান এবং নির্দিষ্ট সময়ে উঠে পড়ুন। যাঁদের ঘুম খুব পাতলা তাঁরা হোয়াইট নয়েজ (White Noise) যেমন পাখার শব্দ বা একটানা এক সুরে বেজে চলা বাজনার শব্দের সাহায্য নিতে পারেন।
নিয়মিত শরীরচর্চা, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমে রক্তশর্করা যেমন নিয়ন্ত্রণে থাকে, ওজনও তেমন স্বাভাবিক থাকে যা ভালো ঘুমের জন্য দরকারি।