'আগুন পান’ আমরা অনেকেই খেয়েছি। কিন্তু আগুন ফুচকা কখনও চেখে দেখেছেন। অবাক লাগলেও নতুন বছরে কিন্তু "আগুন ফুচকা" একেবারে হিট।
বছরের প্রথম দিন থেকেই মুখে আগুন লাগাতে, লাইনে দাঁড়িয়ে এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা! আর সেই আগুন ফুচকা তাঁর গ্রাহকদের মুখে তুলে দিতে তৈরি ফুচকা বিক্রেতা সন্তু!
নতুন বছরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে মুখে আগুন লাগানোর এমন চিত্র এখন দেখা যাচ্ছে নদিয়ার শান্তপুরে। দেখে প্রথমে পথ চলতি মানুষ ভিমরি খেলেও ফুচকা প্রেমীরা কিন্তু ভীষণ খুশি।
ইতিহাস বলে মহাভারতের পঞ্চপান্ডবের সাথে দ্রৌপদীর বিয়ের পর শাশুড়ি কুন্তি ময়দা মাখা এবং আলু সবজি দিয়ে কিছু বানানোর জন্য দৌপদ্রীকে নির্দেশ দেন। সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে অসাধারণ স্বাদের ফুচকা বানিয়েছিলেন পাঞ্চালী।
গুপচুপ, বাতাসি, পাকরা, টিক্কি, ফুলকি, পানি কে বাতাসে, পাকোরি ,পানিপুরি, গোলগাপ্পা সামবেদ এ বিভিন্ন নাম থাকলেও বালয়া গোলাকার এই বস্তুটি ফুচকা বলেই আট থেকে আশির কাছে জনপ্রিয়।
ফুচকার পুর হিসাবে আলু, সবজি, স্যালাড, ঘুগনি, দই ব্যবহৃত করা হয়। আবার তেঁতুল জলের পরিবর্তে ধনে পাতার চাটনি, পুদিনা মিশ্রিত জল, খেজুর জল, লেবুর জলে ডুবিয়েও পরিবেশন করতে দেখা যায়।
তবে যতো ভিন্ন স্বাদেরই থাকুক না বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা নতুনত্বের দিকে নজর। আর সেই কথা মাথায় রেখে এতদিন কোরোনা সংক্রমণের জেরে ব্যাবসা ক্ষতি হওয়াতে নতুন উদ্যমে নতুন পরিকল্পনায় ফুচকার রূপ ফিরালো সন্তু।
পানের মধ্যে আগুন ধরিয়ে মুখে ঢোকানোর, ব্যবস্থা থাকলে ফুচকার মধ্যে হবে না কেন ? সেই ভাবনা থেকেই "আগুন ফুচকা" নিয়ে এসেছেন নদিয়ার শান্তিপুর শহরের স্টেডিয়ামপাড়ার বাসিন্দা সন্তু মন্ডল। সদ্য স্নাতক হওয়ার পরই পিতৃহারা হন। ওপেন ইউনিভার্সিটি তে মাস্টার ডিগ্রি করার সাথেই সংসারের হাল ধরতে বাবার ফুচকার ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছেন তিনি ।
তবে এই প্রজন্মের ছেলে হয়েও বাবার সাবেকি ব্যবসার হাল ফেরাতে, নিত্যনতুন স্বাদে খরিদ্দার আকৃষ্ট করতে এমন পরিকল্পনা শন্তুর। শান্তিপুর লাইব্রেরী মাঠের পাশে সন্তুর সন্ধ্যাকালীন ফুচকা খেতে, ভিড় উপচে পরে বিকাল থেকেই ।তার বন্ধু-বান্ধবীরা তার দোকানে ভিড় জমাচ্ছে আগুন ফুচকা খতে আর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে তার এমন ফুচকা।