Miazaki Worlds Expensive Mango Siliguri Geetanjali Mango Festival: চা মানেই যেমন দার্জিলিং, তেমনই আম মানেই আমরা জানি, মালদা কিংবা মুর্শিদাবাদ, বড়জোর নদিয়া। কিন্তু শুক্রবার থেকে আমের গন্ধে ম ম গোটা শিলিগুড়ি। ব্যাপারখানা কি?
শিলিগুড়ির আশপাশে ফল বলতে একমাত্র আনারস। যা বিশ্বমানের এবং নিয়মিত রফতানি করা হয়। চা পাতাও হয় অঢেল। কিন্তু আম? বিক্ষিপ্তভাবে কারও কারও অধিক যত্নে দু-একটা ফললেও তাকে ফলন বলে ধরা যায় না।
আর শিলিগুড়ির আবহাওয়ায় তেমন আম হয় বলে কেউ কস্মিনকালেও শোনেনি। তাহলে? আসলে তা নয়, শিলিগুড়িতে এই মুহূর্তে ঘাঁটি গেড়েছে বিশ্বের আড়াইশো প্রজাতির রকমারি আম। যেমন তাদের রূপ, তেমন তাদের রং।
আর তাদের নেতৃত্বে রয়েছে বিশ্বের এই মুহূর্তের সবচেয়ে দামী আম জাপানি বংশোদ্ভূত মিয়াজাকি। যার দাম প্রায় আড়াই লাখ টাকা কেজি।
ফলে এ স্বাদে ভাগ বসানোর আশা করা বৃথাই। এত টাকা খরচ করে আম কজনই বা খেতে পারে। তবে স্বাদ নাই বা পেলেন, রূপ-যৌবন উপভোগ করতে আপত্তি কোথায়।
শিলিগুড়ির একটি শপিংমলে এ বছর ম্যাঙ্গো ফেস্টিভ্যালের আসর বসেছে। নাম গীতাঞ্জলী ম্যাঙ্গো ফেস্টিভ্যাল। আয়োজক হেল্প টুরিজম। সবার এখন গন্তব্য এখন সেমুখপানেই।
আমের এই উৎসবে এবারে আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু এই মিয়াজাকি আম। এই আম জাপানের। যাকে জাপানিরা বলে সূর্যডিম। তা এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
রঙ ও দামের জন্য মানুষ এই আমের দিকেই ঝুঁকছেন। আম না কিনলেও কৌতূহলের জন্য অনেকেই যাচ্ছেন এই স্টলে। ছবি তুলছেন, আমের সঙ্গে সেলফি তুলেও।
এবারের আমের উৎসবে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু জাপানের মিয়াজাকি আম। তার চারপাশেই ঘুরঘুর করছেন ভিজিটররা। কেনার ক্ষমতা প্রায় কারওই নেই। তবে ছবি তুলতে ও নেড়ে দেখতে বাধা কোথায়?
বীরভূমের শওকত হুসেন নামে এক আমচাষি এই আম ফলিয়েছেন নিজের বাগানে। তিনিই উৎসবে এই আম নিয়ে এসেছেন। তিনি অবশ্য মাত্র ১০ টি মিয়াজাকি আম নিয়ে এসেছেন।
তবে উৎসবে যেহেতু বাণিজ্যিক ব্যপারটি তেমন মুখ্য নয়, তাই বিশেষ করে মানুষ যাতে কিনতে পারে এবং স্বাদ নিতে পারে, তাই তিনি সস্তায় আমটি মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছেন।
জানা গিয়েছে ২ হাজার টাকা প্রতি পিস হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে এই মিয়াজাকি আম। তবে যদি চাহিদা বেড়ে যায়, তাহলে এই আম নিলামও করা হতে পারে।
জাপানি মিয়াজাকি আম উৎপাদনকারী কৃষক সৌকত হুসেন বলেন, প্রায় দেড় বছর আগে বিদেশী জাপানি মিয়াজাকি আমের ৫টি গাছ লাগিয়েছিলেন তিনি।সেই গাছগুলির মধ্যে একটি গাছে ৩৮টি আম হয়েছে। বীরভূমে এই আম নিলামে বিক্রি হয়েছে প্রতি পিস ১০ হাজার টাকায়।
ম্যাঙ্গো ফেস্টিভ্যাল আয়োজক সংস্থার তরফে ডঃ সমরেন্দ্রনাথ খাড়া বলেন, জাপানি মিয়াজাকি আম এবারের আম উৎসবের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। এই আমের রঙও খুব সুন্দর। স্বাস্থ্যের জন্যও বেশ উপকারী।
আমের উৎসবে এবছর প্রায় ২৫০টি স্টল বসেছে। তবে মিয়াজাকি আম শুধু নয়, রংয়ে গন্ধে, স্বাদে টেক্কা দিচ্ছে দেশি আমগুলিও। পরিমাণে বেশি হওয়ায় আর দাম তুলনামূলক সস্তা হওয়ায় অনেকেই সেই আম নিয়ে যাচ্ছেন।