সামনেই দোলযাত্রা বা হোলি। রঙের উৎসবে আনন্দে মেতে ওঠেন আট থেকে আশি সকলে। একে অপরকে আবির ও আরও ভিন্ন রঙে রঙিন করে তলেন এদিন। তবে একটা জিনিস লক্ষ্য করলে দেখা যায়, হোলিতে বেশীরভাগ মানুষই সাদা রঙের পোশাক পরেন। জানেন কেন এই বিশেষ ট্রেন্ড?
প্রায় মাস খানেক আগে থেকেই মেয়েদের ক্ষেত্রে সাদা কুর্তি, সালোয়ার কামিজ বা টি-শার্ট, এমনকি শাড়ি কেনার হিড়িক লাগে। আর ছেলেরা কেন সাদা রঙের পাজামা- পঞ্জাবি কিংবা টি-শার্ট। মেয়েদের ক্ষেত্রে সঙ্গে থাকে সাদা কিংবা রঙিন ওড়না বা স্কার্ফ।
সাদা রং শান্তির প্রতীক। এই উৎসবে রাগ-অভিমান ভুলে একে অপরকে আলিঙ্গন করেন এবং ক্ষমা করেন। ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানবতার বার্তা দিতেই এদিন সাদায় নিজেদের সাজান সকলে।
শাস্ত্র মতে দোলযাত্রার মানে অশুভ সব বিনাশ করে শুভর আগমন। মূলত দুদিন ধরে চলে উৎযাপন। বাঙালিরা রঙের উৎসবকে দোলযাত্রা হিসাবে পালন করেন এবং অবাঙালিরা হোলি বলে। দোলের পরের দিন হোলি হয়। আর তার আগের দিন পালিত হয় হোলিকা দহন বা ন্যাড়া পোড়ানো। প্রহ্লাদকে বাঁচাতে বিষ্ণুর হোলিকা বধকে উদযাপন করা হয় এভাবেই। হোলির আগের দিন কোনও খোলা মাঠ বা স্থানে কাঠ ও জ্বালানি মজুদ করে সাজানো হয়। তার উপর একটি কটি পুত্তলি রাখা হয়, যা হোলিকার প্রতীকী রূপ। এই হোলিকা প্রহ্লাদকে ছলনা করে আগুনে পোড়াতে চেয়েছিলেন। সেই সময়ে প্রহ্লাদের শুধুমাত্রে ভগবান বিষ্ণুর নাম স্মরণ করেছিলেন। সেই সময় প্রহ্লাদ বেঁচে গিয়ে হোলিকা পুড়ে যান। ঠিক এভাবেই হোলিতে অশুভকে বিনাশ করা হয়। সাদা রং সত্যকে বোঝায়।
তাছাড়া অন্য যে কোনও রং সাদা রঙে খুব ভাল করে ফুটে ওঠে। সেই সঙ্গে সাদা রং আভিজাত্যপূর্ণ মনে হয়। বেশীরভাগ মানুষই তাই বেছে নেন সাদা।
এই সমস্ত কারণ ছাড়া অনেকে না জেনে শুধুমাত্র বিভিন্ন রং ভালো করে বোঝানোর জন্য সাদা পরেন। সাদা রঙের পোশাক এদিন যেন মনে হয় ক্যানভাস যা তুলির রঙিন টানে আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।