তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অমর উপন্যাস ‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা’ পড়া নেই এমন বাঙালি বিরল। কিন্তু আসল হাঁসুলি বাঁক দেখা নেই সিংহভাগেরই।
তাই বাঙালির সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে হাঁসুলি বাঁককে পর্যটনের মানচিত্রে আনতে উদ্যোগী রাজ্য। আধো মিথ, আধো বাস্তবকে ঘিরে হাঁসুলি বাঁকের পরতে পরতে রহস্য।
উদ্যোগ নেওয়া শুরু হয়েছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। লাভপুর থেকে কোপাই নদীর হাঁসুলি বাঁক পর্যন্ত পাকা রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। হাঁসুলি বাঁকের পাশে তৈরি করা হবে পিকনিক স্পট, ফুলের বাগান। নদী সংলগ্ন একটি পুকুরে পর্যটকদের জন্য থাকবে বোটিংয়ের ব্যবস্থা।
তারাশঙ্করপ্রেমী বা সাধারণ পর্যটকরা যাতে হাঁসুলি বাঁক ঘুরে দেখার পাশাপাশি সেখানে বেশ কিছুটা সময় কাটাতে পারেন তার জন্যই এই ব্যবস্থা। বীরভূম জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন লাভপুর তথা বীরভূমের মানুষ।
তারাশঙ্করের ‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা’ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় উপন্যাস। উপন্যাস লেখার সময় থেকে সমাজের, মানুষের জীবনযাত্রার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু একই থেকে গিয়ে কোপাই নদীর হাঁসুলি বাঁক।
তারাশঙ্কর তাঁর লেখাতে নদীর এই বাঁককে মেয়েদের হাঁসুলি হারের সঙ্গে তুলনা করে গিয়েছেন, কোপাই নদীর প্রায় মাঝামাঝি জায়গায় এই বিখ্যাত বাঁকটার নাম হাঁসুলি বাঁক। একেক সময় এই হাঁসুলির মতো রং বদল হয়। এই জন্যে বাঁকটার নাম হাঁসুলি বাঁক।
পরিকাঠামোর অভাবের জন্য এই হাঁসুলী বাঁক দীর্ঘদিন ধরে পর্যটক, সাধারণ মানুষের কাছে ছিল অনেকটা স্বপ্নের মতো। উপকথা পড়ে তাঁরা নিজেদের মতো করে ভেবে নিতেন হাঁসুলী বাঁককে।
কিন্তু এবার বাস্তবের ছোঁয়া পাবে পর্যটক ও সাধারণ মানুষ। বীরভূম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা প্রকল্পের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে লাভপুর পুরনো বাসস্ট্যান্ডের কাছ থেকে সাড়ে ৩ কিলোমিটার পাকা রাস্তা তৈরি করা হয়েছে হাঁসুলি বাঁক পর্যন্ত।
রাস্তার কাজ শেষ হলে হাঁসুলী বাঁকের পাশে বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগিয়ে তৈরি করা হবে পিকনিক স্পট, থাকবে পানীয় জলের ব্যবস্থা। একইভাবে ফেন্সিং দিয়ে ঘিরে তৈরি করা হবে ফুলের বাগান।
বাঁক সংলগ্ন পুকুরে থাকবে বোটিংয়ের ব্যবস্থা। পুরোটাই হবে লাভপুর এক নম্বর পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের প্রকল্পের মাধ্যমে। ফলে হবে কর্মসংস্থানও।