বর্ষার মেঘে ডুবে থাকে ডুয়ার্সের কালিম্পং জেলার সুন্তালেখোলা। যত দূর চোখ যায় শুধুই দিগন্ত বিস্তৃত সাদা মেঘের দল ছুটে বেড়াচ্ছে পাহাড়ের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে।
বছরভর শীতের আমেজ এই সুন্তালেখোলায়। পাহাড়ের গায়ে রংবেরঙের মরশুমি, বাহারি ফুল আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে সুন্তালেখোলা নামের ছোট্ট এই পাহাড়ি গ্রামটিকে।
সুন্তালেখোলা থেকেই মাত্র তিন কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত কালিম্পং জেলার রকি আইল্যান্ড। যাঁরা ঘুরতে আসেন, তাঁরা একযাত্রায় দুটি জায়গায় ঢুঁ মারতে ভোলেন না।
এখানে প্রকৃতি তার রূপ-লাবণ্য দু-হাতে উজার করে দিয়েছে। মেঘ ছড়ানো চারদিকে শুধু ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। একটানা, একঘেঁয়ে কিন্তু অভূতপূর্ব।
একতলা দোতলা সমান সব উঁচু পাহাড়ি পাথর। পাথরের বাধা উপেক্ষা করে প্রবল গতিতে সশব্দে ছুটে চলেছে মূর্তি নদী। ঝরঝর ধারায়।
চারদিকে পাহাড়ের গা উপচে নীচে নেমে আসছে অজস্র ঝরনা। সবুজ পাহাড়ের দেহে ধাপে ধাপে কমলালেবুর বাগান। সেখান থেকেই নাম সুনতালে খোলা।
কেউ কেউ বলে সানতালেখোলা। কমলালেবুকে স্থানীয় ভাষায় বলে সানতালা। সেখান থেকেই সম্ভবত নাম হয়েছে। বর্ষাতেও কমলালেবু হয়ে থাকে।
করোনা অতিমারিতে ঘরবন্দী ভ্রমণ পিপাসু তামাম বাঙালি। সেই সাথে ঘরবন্দি থাকার জেরে অবসাদে ভুগছে গোটা দুনিয়াই।
ঘরবন্দী অবসাদের জীবন থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে সুযোগ পেলেই মানুষ ছুটছে প্রকৃতির কোলে। শহুরে যান্ত্রিক জীবন থেকে বাইরে।
ঘরবন্দী জীবনের অবসাদ কাটাতে মানুষ এখন পাহাড়,নদী, জঙ্গল, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকে মোহিত হতে ছুটে আসছেন ডুয়ার্সের জঙ্গল ঘেরা, পাহাড়, নদী স্পর্শ পেতে, বৃষ্টির জলে ভিজতে।
উত্তরবঙ্গের মানুষ হাতে মাত্র দুদিন ছুটি থাকলেই ঘরবন্দি, অবসাদের জীবন থেকে মুক্তি পেতে চলে আসতেই পারেন কালিম্পং জেলার ছোট্ট এই দুটি গ্রামে।
তবে কলকাতা বা দক্ষিণবঙ্গ থেকে আসতে হলে যাওয়া-আসার জন্য আরও দুটি দিন বাড়তি ছুটি থাকলেই চলবে। দিব্যি অক্সিজেন নিয়ে ফেরা যায়।
আলিপুরদুয়ারের দিক থেকে গেলে চাপড়ামারি, লাটাগুড়ি, গরুমারা, সামসিং চা বাগান ছুঁয়ে পৌঁছে যাওয়া যায় সুন্তালেখোলা এবং রকি আইল্যান্ডে।
কলকাতার দিক থেকে আসলে এনেজেপি স্টেশন অথবা বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে সেবক কিংবা গজলডোবা হয়ে যাওয়া যায় একাধিক রুটে।