ইলিশ ইলিশ আর ইলিশ। গোটা বর্ষা কাল ধরেই মন শুধু হাঁকুপাঁকু করে একটা ইলিশের জন্য। পাকা ইলিশ, কাঁচা ইলিশ, পদ্মার ইলিশ, মেঘনার ইলিশ, গঙ্গার ইলিশ, সাগরের ইলিশ, কত কী। কিন্তু সেরা এবং চাহিদার শীর্ষে পদ্মার ইলিশই।
তা সে কলকাতা হোক কিংবা ঢাকা, পদ্মার ইলিশ পাতে তুলতে কৈলাসে সাধনা করতেও রাজি অনেকে। কিন্তু সমস্যা এখন সেই পদ্মার ইলিশকে নিয়েই।
তার কারণ ভরা মরশুমে ইলিশের আকাল দেখা দিয়েছে পদ্মায়। বাংলাদেশ সরকারের হিসেব অনুযায়ী ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে ইলিশ ধরার মরশুম।
জাল, বড় বড় ট্রলার নিয়ে নিয়মিত নদী এবং সাগরে যাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা কিন্তু হাতে কিছুই আসছে না। কারণ পদ্মা নদীতে অনুপস্থিত ইলিশ।
গত কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে মেঘলা আবহাওয়া রয়েছে। পুবালি বাতাসের সঙ্গে কখনও ইলশেগুঁড়ি কখনও বা নামছে ঝুমবৃষ্টি। এই পরিবেশই নদ-নদীতে বেশি ইলিশ পাওয়ার পুরোপুরি উপযোগী। কিন্তু সেখানেও ইলিশের দেখা সেভাবে মিলছে না।
একই চিত্র মেঘনা নদীবেষ্টিত হাতিয়া উপজেলাতেও। ফলে মাথায় হাত পড়েছে মৎস্যজীবীদের। এভাবে চলতে থাকলে মরশুম শেষ হয়ে যাবে। ইলিশ ফিরে যাবে সাগরের গভীরে। তখন হাত কামড়াতে হবে।
আষাঢ়ের শেষেও মিলছে না মাছ। ভরা মরশুমে ইলিশের জোগান না থাকায় আড়তে ব্যবসায়ীরা হাত গুটিয়ে বসে থাকছেন। যে অল্প কিছু ইলিশ আসছে, তার দাম আকাশছোঁয়া। এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা।
কিন্তু কেন এমন অবস্থা? আজ পর্যন্ত কেন তাই ইলিশ সমুদ্র থেকে তার বিচরণ ক্ষেত্র পর্যন্ত পৌঁছাতে পারছে না। নোয়াখালির হাতিয়া, ‘ইলিশের বাড়ি’ বলে পরিচিত চাঁদপুর থেকে বরিশাল অঞ্চলেও ইলিশ তেমন ধরা পড়ছে না বলে জানান স্থানীয় মৎস্যজীবীরা।
মৎস্যজীবীরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আষাঢ় মাসে ইলিশের এত আকাল আগে কখনও দেখেননি। আধিকারিকরা জানান, ইলিশের সংকট থাকায় ইলিশের দাম সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। যতটুকু ইলিশ উঠছে, তার দাম অত্যধিক।