মাইগ্রেনের সমস্যা যাঁদের আছে, শুধুমাত্র তাঁরাই জানেন এর কষ্ট কতটা মারাত্মক হতে পারে! মাইগ্রেন এক বিশেষ ধরনের তীব্র মাথা ব্যথা। মাথার যে কোনও এক পাশ থেকে এই ব্যথা শুরু হয়ে এবং ক্রমশ তা মারাত্মক যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে। তাই একে ‘আধ-কপালি’ ব্যথাও বলতেন অনেকে। মাইগ্রেনের এই ব্যথা অত্যন্ত কষ্টদায়ক এবং দীর্ঘস্থায়ী।
এটি একটি স্নায়বিক ব্যাধি। মাইগ্রেন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় ১০ কোটি মানুষ মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, এর মধ্যে ৮৫ শতাংশই মহিলা! অর্থাৎ, বিশ্বের প্রায় সাড়ে ৮ কোটি মহিলা মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন!
এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রায়ই মাথা ব্যথার সমস্যা হয়। মাইগ্রেনের সমস্যায় আক্রান্তদের ৯০ শতাংশের ক্ষেত্রে এটি বংশগত। আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (JAMA) জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা সমীক্ষা অনুযায়ী, ওষুধ ছাড়াই এর চিকিৎসা করা সম্ভব।
১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের মধ্যেই মাইগ্রেনের সমস্যা বেশি দেখা যায়। অর্ধেকেরও বেশি আক্রান্তের ক্ষেত্রে তাঁদের ১২ বছর বয়সের আগেই প্রথম মাইগ্রেনের ব্যথা হয়। প্রতিদিন প্রায় ৪০ লাখ মানুষের মাইগ্রেন যন্ত্রণা হয়। আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (JAMA) জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের সমীক্ষা অনুসারে, মননশীল ধ্যান এবং যোগব্যায়ামে মাইগ্রেনের সমস্যা বিনা ওষুধেই কমানো যেতে পারে।
গবেষণার সময়, মাইগ্রেনের রোগীদের দুটি দলে ভাগ করা হয়েছিল। প্রথম দলকে মননশীলতা অনুশীলন দেওয়া হয়েছিল। ধ্যান, হঠ যোগ এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ধরণ ইত্যাদি এই দলের সদস্যদের অভ্যাস করানো হয়েছিল। অন্য দলকে মাথাব্যথা এবং মাইগ্রেনের প্রতিটি দিক সম্পর্কে বলা হয়েছিল। তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। এই ধরনের অনুশীলন প্রায় 8 সপ্তাহ ধরে অব্যাহত ছিল।
মার্কিন গবেষকদের দাবি, যাঁরা প্রায় নিয়মিত মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন তাঁদের অন্তত ৯৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক রোগীকে তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন। এই ৯৮ জনকে নিয়ে চালানো সমীক্ষার পর গবেষকদের দাবি, মূলত পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবই মাইগ্রেনের সমস্যাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে! এই ৯৮ জনের অধিকাংশেরই পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব রয়েছে।
মার্কিন গবেষকদের মতে, মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে চাই নিরুপদ্রব ঘুম। তার সঙ্গে প্রয়োজন ধ্যান, হঠ যোগ এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের যোগাভ্যাস। তাঁদের মতে, যাঁদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা অন্তত টানা ৮ ঘণ্টা ঘুমোতে পারলেই মাইগ্রেনের এই সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পেতে পারেন। পাশাপাশি রোজ অন্তত ৩০ মিনিট হঠ যোগ এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের যোগাভ্যাস করা চাই।