ঘোরার ইচ্ছে সকলেরই কমবেশি থাকে। পরিস্থিতির চাপে অনেক সময় হয়ে ওঠে না। আবার সাংসারিক দায়দায়িত্ব পালন করে হাতে টাকাও তেমন জমে না। তাই ইচ্ছে থাকলেও দেশভ্রমণের ইচ্ছে মনেই থেকে যায়। কিন্তু তা বলে কী আপনি ঘুরবেন না, পরিবার নিয়ে ঘোরার ইচ্ছে তো আপনারও থাকতে পারে। তাই কীভাবে সেই সুযোগ পেতে পারেন তা আপনাকে জানিয়ে দিই যাতে, আপনি সামান্য বা প্রায় বিনা খরচে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। সঙ্গে মানসিক শান্তি ফ্রি।
আধ্যাত্মিক মন থাকলে আপনার জন্যই এগুলি
আজকে আপনাকে এমন কয়েকটি জায়গার কথা জানাব, যা মানসিক শান্তি ফিরিয়ে দিয়ে মন-প্রাণ চাঙ্গা করে দেবে। যদি কয়েকটা দিনের ছুটি জোগাড় করতে পারেন তাহলে হিমালয়ের কোলে থাকা বিভিন্ন আশ্রমগুলিকে টার্গেট করে ঘুরে আসতে পারেন। প্রতিটিতেই এমন শান্তি বিরাজ করে যেন ফিরে আসতে মন চাইবে না। আশ্রমে থেকে কয়েকদিন ঘুরে আসুন আশপাশের জায়গাগুলি থেকে।
কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা। পাহাড় থেকে সাগর দক্ষিণে সাগর, হিমালয় থেকে সাগরকিনারের সৌন্দর্যের মধ্যেই গড়ে উঠেছে নানা আশ্রম। মনকে শান্ত করার সেরা ঠিকানা হতে পারে এই আধ্যাত্মিক কেন্দ্রগুলি।হিমালয়ের এই আশ্রমগুলিতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে পারেন যে কেউ। এখানে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে বিনামূল্যে। অনেকেই এখান কিছুদিন থেকে মানসিক শান্তি লাভ করে চলে যান।
এগুলির খরচ কত?
খরচের কথা ভাবতে হবে না। আশ্রমগুলিতে থাকতে কোনও খরচ লাগে না। এমনকী যদি আশ্রমের খাবার খান সেটিও মিলবে একেবারে বিনামূল্যে। বাইরেও ইচ্ছে করলে খেতে পারেন। তবে বাইরের খাবার আশ্রমে এনে খেতে পারবেন না। আশ্রমগুলিতে সম্পূর্ণ নিরামিষ রান্না অপূর্ব স্বাদ জিভে লেগে থাকবে।
গীতা ভবন, ঋষিকেশ
ঋষিকেশ বললেই মনে আসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে পরিপূর্ণ হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এক পবিত্র তীর্থস্থল। আর এই ঋষিকেশেই রয়েছে গীতা ভবন। গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত গীতা ভবন আধ্যাত্মিক সাধকদের পছন্দের তালিকায় একেবারে শীর্ষে অবস্থান করে। এখানে বিনামূল্যে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে রয়েছে মোট এক হাজারটি ঘর। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটক কিংবা শান্তিপ্রেমীরা এখানে আসেন। বেশকিছুদিন বসবসাও করেন।কেউ আধ্যাত্মিক পরিবেশে নিজেকে কিছুদিনের জন্য বিলিন করে দেন। কেউ আবার নিছকই পর্যটক। আশ্রমের ভিতরে ধ্যান এবং যোগ সাধনার ব্যবস্থা রয়েছে। চাইলে সেগুলিতে অংশ নেওয়া যায় বিনা খরচে।
ভারত হেরিটেজ সার্ভিস, (ঋষিকেশ)
ঋষিকেশের আরেক জনপ্রিয় আশ্রম হল ভারত হেরিটেজ সার্ভিস। এই আশ্রমে যতদিন ইচ্ছে বিনামূল্যে থাকা-খাওয়া সহ বিভিন্ন রকম সুবিধে যায়। অংশ নেওয়া যায় যোগাসন, মেডিটেশন কোর্স, ডিটক্স প্রোগ্রাম এবং আরও অনেক কিছুতে। আশ্রমে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আশ্রমে কাজ করতে পারেন।এখানে অতি সাধারণ জীবনযাপনে মন শান্ত ও স্নিগ্ধ হয়ে ওঠে।
পরমার্থ নিকেতন (ঋষিকেশ)
ঋষিকেশের সবচেয়ে বড় আশ্রম হল পরমার্থ নিকেতন। সবসময়ের স্বেচ্ছাসেবকদের আশ্রম প্রাঙ্গণে বিনামূল্যে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এই আশ্রম প্রতি বছর আন্তর্জাতিক যোগ উৎসবের আয়োজন করে। সে সময় এখানকার দৃশ্য ও উৎসব দেখার মতো।
শিবপ্রিয়া যোগ আশ্রম (উত্তরাখণ্ড)
মণিকরণ সাহেব (হিমাচলপ্রদেশ)
হিমাচল প্রদেশের কুলু জেলার মণিকরণ সাহেব গুরুদ্বার। এখানে দর্শনার্থীদের একদম নিখরচায় থাকার অনুমতি মেলে। এছাড়াও আপনি এখানে বিনামূল্যে গাড়ি পার্ক করতে পারবেন। বিনামূল্যে লঙ্গরের সুস্বাদু খাবার পাবেন। পার্বতী নদীর তীরে এই গুরুদ্বারে একসঙ্গে প্রায় চার হাজার লোক বাস করতে পারে। শুধু তাই নয়, ইচ্ছে করলে কেউ সেখানে আমৃত্যু থাকতে পারেন।
শ্রী যোগাশ্রম, (লক্ষ্মণঝুলা)
ঋষিকেশের লক্ষ্মণঝুলার শ্রী যোগাশ্রম একটি যোগার আশ্রম। প্রকৃতির কোলে বসে ধ্যান করার জন্য সর্বোৎকৃষ্ট জায়গা। এখানে এলে নিজের ভিতরে আধ্যাত্মিক পরিবর্তন উপলব্ধি করতে পারবেন। এই আশ্রম অবশ্য মূলত বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের থাকার স্থান। তবে যুবক-যুবতী এবং একা মহিলারাও এখানে থাকতে পারেন। অবশ্য এই আশ্রম একদম ফ্রি না হলেও খরচ নেই এর সমতুল।