প্রথমবার বিজ্ঞানীরা অমর কাঁকড়া পেয়েছেন। এটি ক্রিটোসিয়স কালের। অর্থাৎ এর বয়স কাছাকাছি প্রায় সাড়ে ১০ কোটি বছর থেকে সাড়ে ৯ কোটি বছরের মধ্যে।
বৈজ্ঞানিকরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন এটি পরিষ্কার জল এবং সামুদ্রিক জীব এর মধ্যেকার সংযোজক। বৈজ্ঞানিকরা এই কাঁকড়াকে অমর বলছেন না। কারণ এটি এখনও জীবিত রয়েছে। বরং এর শরীর কোটি কোটি বছর আগে একটি মেঘে বন্দি হয়ে গেছিল। যে কারণে ওই কাকড়ার শরীর এখনও পর্যন্ত ঠিকঠাক রয়েছে।
অর্থাৎ বিজ্ঞানীরা এটিকে নিয়ে বিস্তারিত পড়াশোনা করতে শুরু করেছেন। এই অমর কাঁকড়াটিকে ক্রেটেস্টপারা আথানাটা নাম দেওয়া হয়েছে। আথানাটা অর্থাৎ অমর। ক্রেট মানে খোলসওয়ালা এবং অসপারা মানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মেঘ এবং জলের দেবতার নাম।
এই গবেষণাটি সাইন্স এডভান্সের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। হাভার্ড ইউনিভার্সিটির পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চার জেবিএল নিউড জানিয়েছেন, অমর কাঁকড়া এই কারণে দুর্লভ, কারণ বৈজ্ঞানিকরা সাধারণভাবে কীটপতঙ্গ, বিছা, পাখি, মেঘ এ জড়িয়ে পাওয়া যায়। কিন্তু সবাই সবই মাটিতে বসবাসকারী জীব।
প্রথমবার এমন হয়েছে যে কোনও প্রাণী, যেটি জলে থাকে আকাশে মেঘের মধ্যে জড়িয়ে পাওয়া গিয়েছে। সাধারণভাবে কাঁকড়া জলে থাকে। তারা জঙ্গলে আসে না। না গাছে চড়ে। জেভিয়ের জানিয়েছেন যে অমর কাঁকড়ার শুধু ২ মিলিমিটার দৈর্ঘ্য। কিন্তু একদম সুরক্ষিত।
অনেকবার পুরাতত্ত্ববিদদের মডেল বানানো কঠিন হয়ে যায়। কারণ তাদের শরীরের আকার বুঝতে পারা যায় না। কিন্তু এই অমর কাঁকড়া সম্পূর্ণভাবে সুরক্ষিত রয়েছে এবং পূর্ণাঙ্গ শরীর নিয়ে অবস্থিত রয়েছে। এর শরীরে একটিও অংশ নষ্ট হয়নি বা ভাঙাচোরা নয়। শরীর থেকে একটা চুলও সরে যায়নি।
জেভিয়ার এবং তার দল এর এক্সরে করেছেন। ওই অমর কাঁকড়ার শরীরের থ্রিডি মডেল বানানো হয়েছে যাতে তার বাইরের শরীরের ডিটেইল পড়াশোনা করা যেতে পারে। যখন এর পা এবং শুঁড় মনোযোগ দিয়ে দেখা যায়, তাহলে জানা যায় যে আজকের যুগে উপস্থিত কাঁকড়ার মতোই দেখতে এবং তারই পূর্বসূরী। কারণ সমস্ত কাঁকড়া আসল হয় না। কিছু কাঁকড়া নকল হয়।
বৈজ্ঞানিকদের বক্তব্য যে আসল এবং নকল কাঁকড়া পৃথিবীতে পাঁচবার বিকশিত হয়েছে অর্থাৎ বিবর্তন হয়েছে। বৈজ্ঞানিকরা কাঁকড়ার একটি বিকাশের ওপর জার্নাল এসএস লিখেছেন। ইংলিশ জীববিজ্ঞানী লাঞ্চ লক আলেকজান্ডার বোরডেল এই জার্নালে লিখেছেন, যে কাঁকড়ার এই বিকাশকে এবং কার্সিনোজেসন বলে।
এই অমর কাঁকড়া বিবর্তনের মধ্যবর্তী সময়ের। প্রকৃতপক্ষে এখনও পর্যন্ত এইটা জানা যায়নি। যে এটি মেঘের মধ্যে কীভাবে ফাঁসল, তা নিয়ে ইউনিভার্সিটি অফ সাও পাওলো রেভিলিউশনারি ফিজিওলজিস্ট জানিয়েছেন হতে পারে এটি পরিষ্কার জলের কাঁকড়া। অথবা সমুদ্র-জঙ্গল এবং পরিষ্কার জল সব জায়গায় ঘুরে বেড়াতে। এটি ২০১৫ সালে মায়ানমারে খোঁজা হয়েছিল। তবে থেকেই লাগাতার এর স্টাডি করা হচ্ছে।