ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে অনেকেই ফ্যাট বার্নার বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করেন। এই শর্টকাট সূত্রটি কাজ করলেও, এর কিছু ভয়ানক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। কিছু খাবারের সংমিশ্রণ আপনার ওজন এত দ্রুত কমাতে পারে যে, ফ্যাট বার্নারের প্রয়োজন হয় না। জানুন এমন কিছু ফুড কম্বিনেশনের কথা, যা ডায়েটে রাখলে দ্রুত ওজন কমবে।
ডিম ও গরম সস
প্রোটিনের রাজা ডিম, ব্রেকফাস্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ডিমের সঙ্গে গরম সস খেলে কেবল আপনার খিদে কমে না, আরও ক্যালোরি বার্ন করতে সাহায্য করে। বিজ্ঞানীরা দাবি করেন যে, লাল লঙ্কায় মজুত ক্যাপসাইসিন নামক উপাদান ফ্যাটে পাওয়া প্রোটিন পরিবর্তন করে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
দই ও বেরি
দই ও বেরি একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য সংমিশ্রণ হিসাবে বিবেচিত। দই শুধুমাত্র আপনার BMI (Body Mass Index) নিয়ন্ত্রণ করে না, তবে শরীরের ওজন ও চর্বিও কমায়। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, বেরিতে উপস্থিত ফ্ল্যাভোনয়েড নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দইয়ের সঙ্গে মিশে স্থূলতায় ভাল কাজ করে।
প্রোটিন পাউডার ও হিমায়িত ফল
প্রোটিন পাউডার ও হিমায়িত ফল একসঙ্গে খেলে দ্রুত ওজন কমতে পারে। খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়িয়ে এবং পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমিয়ে দিলে ওজন দ্রুত কমতে পারে। এটি আমাদের মেটাবলিজমের জন্যও খুব উপকারী।
স্যামন মাছ ও অ্যাভোকাডো
স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ অ্যাভোকাডোও ফাইবারের ভাল উৎস। অর্ধেক অ্যাভোকাডো আপনার দৈনিক ফাইবারের চাহিদার ২৫ শতাংশ প্রদান করে। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, অ্যাভোকাডোর সঙ্গে ওমেগা ফ্যাটি-৩ অ্যাসিড এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ স্যামন মাছ খেলে অনেকক্ষণ খিদে পায় না। অল্প সময়ে ওজন কমানোর জন্য এটি একটি মূল্যবান সূত্র।
পিনাট বাটার ও ওটস
ওটস হল স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্টের মধ্যে একটি। আপনি কি জানেন, ওটসে মাত্র দু'চামচ পি নাট বাটার আপনার হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে এবং খিদে কমাতে কার্যকরী। ওটসে উপস্থিত ফাইবার এবং বাদামের মাখনে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি এটিকে একটি দুর্দান্ত খাদ্য তৈরি করে।
ডিম ও পালং শাক
ডিমে উচ্চমানের প্রোটিন পাওয়া যায়। এই পুষ্টিকর খাবারের রেসিপি খুবই সহজ এবং ওজন কমানোর উপযোগী। আপনি যদি ওজন কমানোর লক্ষে থাকেন, তাহলে আপনার অমলেটে পালং শাক অন্তর্ভুক্ত করুন। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ডিমের সঙ্গে আয়রন সমৃদ্ধ পালং শাক দ্রুত ওজন কমাতে কাজ করে।
উষ্ণ গরম জল ও লেবুর রস, মধু
সকালে ঘুম থেকে উঠে উষ্ণ গরম জলে লেবু ও মধু মিশিয়ে পান করলে উপকার পাওয়া যায়। এটি নিয়মিত রুটিনে রাখলে আপনি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। এতে শুধু আপনার ওজনই কমবে না, এই পানীয় শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতেও কাজ করবে।
গ্রিন টি ও লেবু
যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য গ্রিন টি সেরা পানীয় হিসেবে বিবেচিত। কম ক্যালোরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টযুক্ত এই পানীয় দ্রুত ক্যালোরি বার্ন করে এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে কয়েক কিলো ওজন কমায়। এটি অনেক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, প্রতিদিন ২-৩ কাপ গ্রিন টি পান করলে, বিপাকক্রিয়া বেড়ে যায় এবং দ্রুত ওজন কমে। এটিকে আরও কার্যকর করতে, আপনি এতে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ তাজা লেবুর রস যোগ করতে পারেন।
শাক- সবজি ও অলিভ অয়েল
খিদে নিয়ন্ত্রণে সবুজ শাক-সবজি এবং স্যালাদকে সেরা খাদ্য উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর মধ্যে অলিভ অয়েল যোগ করলে উপকারিতা দ্বিগুণ হয়ে যায়। এই দুটি জিনিস একসঙ্গে খেলে আপনি আপনার ওজন দ্রুত কমাতে পারবেন। অলিভ অয়েল এবং শাক, মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ, আপনার ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
আপেল ও পিনাট বাটার
আপেল এবং পিনাট বাটার ওজন কমানোর জন্য দারুণ খাবার। পিনাট বাটারে মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা দীর্ঘ সময়ের জন্য খিদে নিবারণ করে এবং ইনসুলিন বিপাককেও উন্নত করে। আপেলের সঙ্গে পিনাট বাটার খেলে আপনার ওজন দ্রুত কমে যাবে।