Jayanti Forest News: শীত বিদায়ের সময় আর গরমের আগে জঙ্গলে ঘোরার সবচেয়ে ভাল সময়। গরমেও ঘোরা যায়, তবে আরামদায়ক হয় না।উত্তরবঙ্গের জঙ্গলের মধ্যে গরুমারা, জলদাপাড়ার পর সবচেয়ে বেশি ভিড় যেখানে হয় সেটি হলো বক্সা-জয়ন্তী। দুটি আলাদা জঙ্গল হলেও প্রায় ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকায় এক ঢিলেই দুই পাখি মারেন পর্যটকেরা। বিশেষ করে জয়ন্তী এলাকায় জঙ্গল সাফারি চাহিদা রয়েছে প্রচুর। কিন্তু বিগত বেশ কিছুদিন ধরে সাফারির গাড়ির সংখ্যা কমতে কমতে তলানিতে ঠেকেছিল। যার ফলে প্রচুর পর্যটক সাফারির সুযোগ পাচ্ছিলেন না। যা জয়ন্তীর প্রতি আকর্ষণ কমিয়ে দিচ্ছিল। এবার সেই সমস্য়া অনেকটা মিটতে চলেছে।
গত সেপ্টেম্বরে আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) বক্সার (Buxa) জয়ন্তীতে জঙ্গল সাফারির জন্য ১৫ বছরের বেশি পুরোনো ৪০টি সাফারি কার একসঙ্গে বাতিল করা হয়েছে। ফলে কয়েকমাস ধরে হাতেগোনা কয়েকটি গাড়ি দিয়ে কোনওরকম পর্যটকদের সাফারি করানো হচ্ছিল। সাফারির সুযোগ না পেয়ে জয়ন্তী থেকে বহু পর্যটকও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। তবে এবার ফের পর্যটন ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় জয়ন্তীর পর্যটন ব্যবসায়ীরা। জয়ন্তীতে জঙ্গল সাফারির জন্য ছয়টি আধুনিক সাফারি কার আনলেন সাফারি কার মালিকরা। শীঘ্রই আনুষ্ঠানিকভাবে গাড়িগুলি চালু করা হবে।
কোর এলাকায় ঘোরার মওকা
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে নতুন গাড়ি এলে পোখরি লেক, চুনিয়াঝরা জঙ্গল, মহাকাল মন্দির সহ বক্সা টাইগার রিজার্ভের ২৬ মাইল ও ২৭ মাইলের মতো কোর এলাকাতেও পর্যটকদের সাফারির গাড়ি নিয়ে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে। যাতে আকর্ষণ আরও বাড়বে বলেই নিশ্চিত স্থানীয় পর্যটন সার্কিট।
বক্সা পর্যটন কেন্দ্রের ৯৫ শতাংশ মানুষের জীবন ধারণের একমাত্র উপার্জনের পথ পর্যটন শিল্প। এই পর্যটন কেন্দ্রে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ জঙ্গল সাফারি। এই জঙ্গল সাফারিকে কেন্দ্র করে জয়ন্তীতে ৫০ টি জিপসি গাড়ি রয়েছে। রয়েছে ৭০ জন ট্যুরিস্ট গাইড। এবং সব মিলিয়ে ৭০ টির মতো হোমষ্টে, লজ, হোটেল রেস্তোরাঁ রয়েছে এই কেন্দ্রে। করোনার পর বিপাকে পরে তারা। তবে গত কয়েক বছরে ফের ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে তারা।
কয়েকমাস আগে প্রায় ৪০টি সাফারি কার বাতিল হওয়ার পর জয়ন্তীতে মাত্র পাঁচটি সাফারি কার ও রাজাভাতখাওয়া থেকে দুটি সাফারি কারে পর্যটকরা বক্সার জঙ্গল ঘুরে দেখছিলেন। তবে পর্যটকদের চাহিদার তুলনায় গাড়ির সংখ্যা কম হওয়ায় এ বছর পুজোতে জয়ন্তীতে পর্যটকদের ভিড় তুলনামূলকভাবে কমেও গিয়েছিল। এতে স্বাভাবিকভাবেই মুখ থুবড়ে পড়েছিল ব্যবসা। এখন ছয়জন সাফারি কার মালিক আধুনিক কার কিনেছেন। এতে আশার আলো দেখছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
কতগুলি গাড়ি চালু হচ্ছে?
এই মুহূর্তে জয়ন্তীতে ৭ টি গাড়িতে জঙ্গল সাফারি করানো হচ্ছে। আরও ৬ টি নতুন গাড়ি চলে এসে গিয়েছে। ফলে মোট ১৩ টি গাড়িতে সাফারি করা যাবে।
কতজন একসঙ্গে ঘুরতে পারবেন?
এক সময় জয়ন্তীতে একসঙ্গে ৪০ টি জিপ সাফারি জন্য নামানো ছিল। কিন্তু ১৫ বছরের বেশি পুরনো গাড়ি বাতিল করার প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের পর থেকে এক ধাক্কায় বেকার হয়ে যায় ৩৩ টি গাড়ি। মাত্র ৭ টি গাড়ি এই মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে পেরেছিল। এক একটি গাড়িতে ৬ জন করে পর্যটক ঘুরতে পারেন। ৪০ টি গাড়িতে ২৪০ এক লপ্তে ঘোরার মওকা পেতেন। যা নেমে আসে মাত্র ৪২ জনে। এবার নতুন গাড়ি নামলে সংখ্যাটা দ্বিগুণ হয়ে ৮৪ জনে পৌঁছবে যা কিছুটা হলেও কার সাফারি পর্যটনকে বুস্ট করবে।
এক সময় বক্সা-জয়ন্তীতে পর্যটক উপচে পড়লেও করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে কিছুটা ভাটা পড়ে পর্যটক আনাগোনায় । যা গত বছর পর্যন্ত বজায় ছিল। তবে চলতি বছরে ফের পর্যটকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। বক্সা, জয়ন্তী, চিলাপাতা, কোদাল বস্তি, জলদাপাড়ার পর্যটন ব্যবসায়ীরা খুশি।