ধূমপানে বিগড়ানো ফুসফুসকে বাঁচান এভাবেগোটা বিশ্বে ধূমপায়ীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর অনেকেই এই নেশা ছাড়তে চেয়েও পারছেন না। বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন। ধূমপান ছাড়ার পর ছ’মাস, এক বছর বা বছর দুই তিনেক কাটানোর পরও ফের ধূমপানের আসক্তিতে জড়িয়ে পড়েছেন অনেকে। অপরদিতে বাজার চলতি নেশা ছাড়ানোর পদ্ধতিগুলিও সেভাবে কার্যকর নয়। তবে এমন কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে যা ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আপনার ফুসফুসকে রক্ষা করতে অনেকটাই সক্ষম। তাই ধূমপান ছাড়ার চেষ্টার পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় কিছু সংযোজন, কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে সহজেই সুস্থ থাকা যায়। আসুন এই বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
ব্রকোলি
সবুজ রঙের ফুলকপির মতো দেখতে এই সবজি বাজারে এখন সহজেই পাওয়া যায়। ব্রকোলির মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি-৫ আর ভিটামিন সি। ভিটামিন বি শরীরকে সামগ্রিকভাবে সুস্থ রাখে। আর ভিটামিন সি শরীরের পরিপাকতন্ত্রকে ঠিক রাখে। সুতরাং ব্রকোলি খেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হবে আর ফুসফুসে নিকোটিনের খারাপ প্রভাবও কম পড়বে।
কমলালেবু
কমলা লেবু খেতে নিশ্চয়ই ভালবাসেন! নিকোটিন শরীরে গেলে ভিটামিন সি কমিয়ে দেয়। সেই ঘাটতিটা পূরণ করবে কমলা লেবুর ভিটামিন সি। ফলে, নিকোটিন থেকে যে ক্লান্তি এবং শারীরিক অস্বস্তি জন্ম নেয়, কমলা লেবুর এক কোয়া কাটিয়ে দেবে সেটাও!
পালং শাক
পালং শাকের মধ্যে থাকে ফলিক অ্যাসিড, যা শরীর থেকে নিকোটিন বের করে দিতে সহায়তা করে।
আঙুরের রস
ধূমপানের ফলে শরীরের ভিতরে নিকোটিনের মাধ্যমে জমতে থাকা টক্সিন বেরিয়ে গেলেই ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, ধূমপানের ইচ্ছাও কমতে শুরু করে। আর আঙুরের রস ফুসফুসকে টক্সিন-মুক্ত করতে সাহায্য করে।
মধু
মধুর বেশ কিছু ভিটামিন, উত্সেচক এবং প্রোটিন শরীর থেকে নিকোটিন বের করে দেওয়ার পাশাপাশি সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছাকেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণ মধু সেবনের মাধ্যমে ধূমপান ছাড়তে কোনও অসুবিধাই হয় না।
আদা
ধূমপানের নেশা ছাড়তে চাইলে আদার ব্যবহার করা যেতে পারে। আদা চা বা কাঁচা আদা নিয়মিত খেলে ধীরে ধীরে ধূমপানের ইচ্ছে কমে যায়। ধূমপানের ইচ্ছে হলেই যদি এক টুকরো কাঁচা আদা মুখে দেওয়া যায় তাহলে ধূমপানের ইচ্ছা প্রশমিত হবে অনেকটাই। এ ছাড়া আদা শরীর থেকে নিকোটিনজাত টক্সিন বের করে দেয়। পাশাপাশি, নিকোটিন থেকে জন্ম নেওয়া ক্লান্তি দূর করতেও সাহায্য করে।
মূলো
১ গ্লাস মূলোর রসের সঙ্গে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে দিনে দু'বার করে নিয়মিত খেলে ধূমপানের ইচ্ছা একেবারে কমে যায়। শুধু ধূমপানের অভ্যাসই নয়, যে কোনও ধরনের নেশামুক্তির ক্ষেত্রে আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা মূলোর উপরই ভরসা রাখেন।
লঙ্কাগুঁড়ো
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নানাভাবে যদি নিয়মিত লঙ্কা গুঁড়ো খাওয়া যায়, তাহলে ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ধূমপান করার ইচ্ছাও কমতে থাকে। এক গ্লাস জলে অল্প পরিমাণ (এক চিমটে) লঙ্কার গুঁড়ো ফেলে সেই জলটি পান করা যায়, সেক্ষেত্রে দারুন উপকার পাওয়া যেতে পারে।
তবে এটা মনে রাখবেন ধূমপান যদি একেবারেই ছেড়ে দিতে পারেন তাহলে আপনার স্বাস্থ্য আরও ভালোর দিকে যাবে। কয়েক বছর বেশি আপনার আয়ুও বাড়বে। আপনি আরও তরতাজা ও চনমনে অনুভব করবেন। তাই সবার শেষে চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শই দিয়ে থাকেন।