কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোলেস্টেরল হল একটি মোমের মতো পদার্থ যা যকৃতে তৈরি হয়। কেন এটি শরীরে কাজে লাগে? কোলেস্টেরল শরীরের কোষগুলিকে নমনীয় করে তোলে। বিবিধ ধরনের হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে। কিন্তু সীমিত পরিমাণে তা উপকারী হলেও অতিরিক্ত কোলেস্টেরল ডেকে আনে বিপদ। দুই ধরনের কোলেস্টেরল আছে- ভাল কোলেস্টেরল এবং খারাপ কোলেস্টেরল। ভাল কোলেস্টেরল শরীরের জন্য উপকারী। হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে। খারাপ কোলেস্টেরল আবার বিপদজ্জনক। শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে তা রক্তনালীতে জমা হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে এই কোলেস্টেরল জমতে শুরু করে ধমনীতে। ফলে বন্ধ হয়ে যায় রক্ত চলাচলের পথ। এ কারণে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধির কারণে নানা ধরনের রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পুরুষত্বহীনতা। ইংরেজিতে যাকে বলে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন।
কোলেস্টেরলের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে জীবনযাত্রায় কয়েকটি পরিবর্তন আনতে হবে।
ধূমপান ত্যাগ- সিগারেটে এমন অনেক পদার্থ পাওয়া যায় যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ধূমপানের কারণে কার্বন মনোক্সাইড ফুসফুসে প্রবেশ করে যা রক্তে মিশে যায়। রক্তে কার্বন মনোক্সাইড থাকায় লোহিত রক্তকণিকা থেকে অক্সিজেন কমতে শুরু করে, যে কারণে অঙ্গ ও টিস্যু খুব কম অক্সিজেন পায়। এ ছাড়া ধূমপানের কারণে ধমনীর চারপাশের দেয়াল খুব শক্ত ও অনমনীয় হয়ে যায়,যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
অ্যালকোহল খাওয়া বন্ধ করুন- কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে চাইলে অ্যালকোহল ত্যাগ করা দরকার। অ্যালকোহল না খেলে হার্টের স্বাস্থ্য ঠিক থাকে। অ্যালকোহল সেবনের খেলে শরীরে ভাল কোলেস্টেরল (উচ্চ ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন), খারাপ কোলেস্টেরল (কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন) এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে হার্ট সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে।
স্যাচুরেটেড ফ্যাট খাওয়া কমান- ডায়েটে ফ্যাট থাকলে বাড়ে কোলেস্টেরল। তার জায়গায় আনস্যাচুরেটেডেড ফ্যাট খান। এজন্য খাদ্যতালিকায় উদ্ভিদ-ভিত্তিক তেল, বীজ, বাদাম, মাছ রাখুন।
প্রতিদিন ব্যায়াম করুন- কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে ব্যায়াম আপনার জন্য খুবই উপকারী হতে পারে। দৈনন্দিন রুটিনে জগিং এবং হাঁটা যোগ করলে উপকার পাবেন।
অতিরিক্ত ওজন- হাই কোলেস্টেরলের সঙ্গে স্থূলতা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই বিপজ্জনক। ওজন ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে দিন। কোলেস্টেরলের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে।
শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদরোগসহ বিবিধ অসুখের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পুরুষদের পুরুষত্বহীনতা সৃষ্টি বাড়াতে পারে। পুরুষদের কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে দাম্পত্য সুখ থেকে বঞ্চিত থাকেন।
আরও পড়ুন- কেন্দ্রীয় হারে কতটা DA পাবেন রাজ্যের কর্মীরা?