সর্ষের তেল (Mustard Oil) প্রায় প্রতিটি ভারতীয়ের হেঁশেলেই পাওয়া যায়। বিশেষ করে বাঙালির জীবনের আরেক অঙ্গ। সরিষা গাছের বীজ থেকে তৈরি করা হয় সরিষার তেল বা সর্ষের তেল। এই তেলের চমৎকার স্বাদ, তীব্র ঝাঁঝ যা এই তেলকে অনন্য করে তুলেছে। এই তেল সাধারণত রান্না, ভাজা বা সেদ্ধ দিয়ে মেখে খাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। এছাড়া বডি ম্যাসাজ, সিরাম ও হেয়ার ট্রিটমেন্টেও সর্ষের তেল ব্যবহার করা হয়। সর্ষের তেলের এই ৭টি অনন্য উপকারিতা (Mustard Oil Benefits) জানলে আপনিও অবাক হবেন।
শরীরে জীবাণুর বৃদ্ধি রোধ করে - গবেষণা অনুযায়ী, সর্ষের তেলে এমন কিছু জীবাণু প্রতিরোধকারী বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াকে শরীরে বাড়তে দেয় না। একটি টেস্ট-টিউব সমীক্ষা অনুসারে, সর্ষের তেল Escherichia coli, Staphylococcus aureus এবং Bacillus cereus-এর মতো ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী- সর্ষের তেল ত্বক ও চুলের জন্য খুবই উপকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে। এই কারণেই এই তেলটি ফেস বা হেয়ার প্যাকেও ব্যবহার করা হয়। সর্ষের তেল ফাটা গোড়ালিতেও আরাম দেয়। ত্বক সংক্রান্ত সমস্যা দূর করে এবং হাড় মজবুত করে সর্ষের তেল, তাই প্রায়ই ছোট বাচ্চাদের এই তেল দিয়ে মালিশ করা হয়। সর্ষের তেল বলিরেখা ও সূক্ষ্ম রেখা কমাতেও কাজ করে।
ব্যথা কমায়- সর্ষের তেলে রয়েছে রাসায়নিক অ্যালাইল আইসোথিওসায়ানেট, যা শরীরের ব্যথা কমাতে কাজ করে। এই তেলে আলফা-লিনোলিক অ্যাসিডের মতো ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা প্রদাহ কমাতে এবং বাতের ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে।
ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি কমায়- গবেষণা অনুসারে, সর্ষের তেল নির্দিষ্ট ধরণের ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি এবং বিস্তারকে ধীর করে দেয়। অন্য একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, খাঁটি সর্ষের তেল কোলন ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে বিশেষভাবে বাধা দেয়। আরেকটি প্রাণী গবেষণায় দেখা গেছে, যে এই তেলে পাওয়া অ্যালিল আইসোথিওসায়ানেট মূত্রাশয় ক্যান্সারের বিকাশকে প্রায় ৩৫% বাধা দেয়।
হার্টের জন্য ভালো- সর্ষের তেলে উচ্চ পরিমাণে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। গবেষণা অনুসারে, সর্ষের তেল ট্রাইগ্লিসারাইড, রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি খারাপ কোলেস্টেরল কমায়, যা হার্টকে নিরাপদ রাখে। যদিও বিশেষজ্ঞরা সীমিত পরিমাণে এই তেল খাওয়ার পরামর্শ দেন।
প্রদাহ কমায় - বাতের উপসর্গ উপশম করতে, ব্যথা এবং অস্বস্তি কমাতে, সেইসঙ্গে ব্রঙ্কাইটিস দ্বারা সৃষ্ট প্রদাহ কমাতে এই তেল খুব কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। একটি অ্যানিমাস গবেষণায় দেখা গেছে, সরিষার বীজ খেলে সোরিয়াসিসের প্রদাহ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। এই তেলে পাওয়া ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড অক্সিডেটিভ স্ট্রেসও দূর করে।
সর্দি-কাশিতে কার্যকর- সর্দি-কাশিতে প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে খাঁটি সরিষার তেল ব্যবহার করা হয়। কর্পূরের সঙ্গে সরিষার তেল মিশিয়ে বুকে লাগালে কফ ও আঁটসাঁট ভাবের উপশম হয়। গরম জলে কয়েক ফোঁটা সর্ষের তেল মিশিয়ে ভাপ নিলেও ঠান্ডা ও মাথাব্যথা উপশম হয়।