
বোঁটকা গন্ধই কী কাল হল ! নাকি বিরিয়ানিতে রেওয়াজি খাসির চল কচি পাঁঠাকে ঠেলে দিল পিছনের সারিতে। বাঙালির হেঁসেলে ক্রমশ আনাগোণা কমছে কচি পাঁঠার। কিন্তু কারণ কি, নরম তুলতুলে কচি পাঁঠায় মন মজেনি! এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
পুরনো দুপুরে পাঁঠাই ছিল আরাধ্য
একটা সময় ছিল যখন রবিবার দুপুরে ধোঁয়া ওঠা কচি পাঁঠার ঝোলই ছিল বাঙালি হেঁশেলের সুখের অন্যতম পাসওয়ার্ড। কিন্তু, রেওয়াজি খাসির দাপটে পাঁঠার সেই দিন এখন অতীত। বিরিয়ানি হোক কিংবা ফিস্টি। অথবা বাড়ির হেঁশেলে রমরমিয়ে চলছে রেওয়াজি খাসির মাংস ৷
পাঁঠা আউট, খাসি ইন
উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ, খাসিই এখন পরমপ্রিয়। সুয়োরানীর মতো দুএকটা পেটরোগা কিন্তু ভোজনবিলাসীরা এখনও পাঁঠার শরীর খুঁজলেও মার্কেট এখন রেওয়াজি খাসির দখলে। বহু দোকানে এখন পাঁঠা বিক্রিই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মিলছে শুধু চর্বিযুক্ত রেওয়াজি খাসিই। বিশেষ করে বিরিয়ানি যখন থেকে বাঙালির ফাস্টফুডে পরিণত হয়েছে, তখন থেকেই চিকেনের পাশাপাশি খাসি ঢুকে গিয়েছে রসনার অন্দরে।
বিহারের খাসি এখন বাংলা জুড়ে
বিহারের খাসির দাপটে বাংলার কচি পাঁঠা যে বিপন্ন, সে তথ্যা স্বীকার করেছে রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরও৷ জানা গিয়েছে,কচি পাঁঠার বাঁধা খদ্দের রয়েছে, তার বাইরে খুব একটা বিক্রি হয় না। অনেক সময় পাঁঠার জায়গায় ছাগল চালিয়ে দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে, তাই অনেক ক্রেতা ঝুটঝামেলা এড়াতে রেওয়াজি খাসির দিকে ঝুঁকছেন৷
বোঁটকা গন্ধই কি কাল হল !
আসলে কচি পাঁঠা কেজি পাঁচেকের মধ্যে হলে তা জমে ভাল। কিন্তু তা আবার বিক্রেতাদের তেমন লাভ দেয় না। প্রাণি বিজ্ঞানীরা বলছেন, হরমোনের কারণে একটি নির্দিষ্ট সময়ে পাঁঠার গা থেকে বোঁটকা গন্ধ বেরোয়৷ মাংসেও সেই গন্ধ মেলে ৷ তবে খাসির মাংসে সেই গন্ধ থাকে না৷ ফলে আধুনিক বাঙালি উটকো দুর্গন্ধ ঝেড়ে ফেলতেই পাঁঠাবিমুখ হয়েছে। এমন তত্ত্বই সবচেয়ে জোরালো হয়েছে।
হরিণঘাটার খাসি এখন বাজারে ট্রেন্ডিং
লাইভস্টক ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় হরিণঘাটা ফার্মের অধীনে ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট চাষ করার বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। ব্ল্যাক বেঙ্গল গোটের পুরুষ শাবকগুলিকে খাসি করার পরেই প্রতিপালন করানো হবে৷ তারপর তা হরিণঘাটা ফার্ম কিনে নেবে। খাসিতে পরিণত করা হলে আর উটকো বোঁটকা গন্ধ থাকবে না।