শীতে জঙ্গলে ঘোরার হিড়িক বেড়েছে। উত্তরবঙ্গের জঙ্গলের মধ্যে গরুমারা, জলদাপাড়ার পর সবচেয়ে বেশি ভিড় যেখানে হয় সেটি হলো বক্সা-জয়ন্তী। দুটি আলাদা জঙ্গল হলেও প্রায় ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকায় এক ঢিলেই দুই পাখি মারেন পর্যটকেরা। বিশেষ করে জয়ন্তী এলাকায় জঙ্গল সাফারি চাহিদা রয়েছে প্রচুর। কিন্তু বিগত বেশ কিছুদিন ধরে সাফারির গাড়ির সংখ্যা কমতে কমতে তলানিতে ঠেকেছে। যার ফলে প্রচুর পর্যটক সাফারির সুযোগ নিতে পারছেন না।
এবার সেই সমস্যা মেটাতে পদক্ষেপ করল বন দফতর। আরও নতুন জিপ আনা হচ্ছে জঙ্গল সাফারি জন্য। ফলে এক ধাক্কায় দ্বিগুণ হচ্ছে সাফারির গাড়ির সংখ্যা। যার ফলে বেশ কিছু পর্যটক আরও বাড়তি ঘোরার সুযোগ পাবেন। যে খবর ছড়িয়ে পড়তে এই পর্যটন সার্কিটে ব্যাপক খুশি হওয়া।
কতগুলি গাড়ি আনা হচ্ছে?
এই মুহূর্তে জয়ন্তীতে ৭ টি গাড়িতে জঙ্গল সাফারি করানো হচ্ছে। আরও ৭ টি নতুন গাড়ি চলে আসবে এ মাসেই। কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন গাড়ি ঢুকে যাওয়ার কথা। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফে জানানো হয়েছে যে, জানুয়ারি মাসের মধ্যেই বাড়তি গাড়ি ঢুকে যাবে।
কতজন একসঙ্গে ঘুরতে পারবেন?
এক সময় জয়ন্তীতে একসঙ্গে ৪০ টি জিপ সাফারি জন্য নামানো ছিল। কিন্তু ১৫ বছরের বেশি পুরনো গাড়ি বাতিল করার প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের পর থেকে এক ধাক্কায় বেকার হয়ে যায় ৩৩ টি গাড়ি। মাত্র ৭ টি গাড়ি এই মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে পেরেছিল। এক একটি গাড়িতে ৬ জন করে পর্যটক ঘুরতে পারেন। ৪০ টি গাড়িতে ২৪০ এক লপ্তে ঘোরার মওকা পেতেন। যা নেমে আসে মাত্র ৪২ জনে। এবার নতুন গাড়ি নামলে সংখ্যাটা দ্বিগুণ হয়ে ৮৪ জনে পৌঁছবে যা কিছুটা হলেও কার সাফারি পর্যটনকে বুস্ট করবে।
এক সময় বক্সা-জয়ন্তীতে পর্যটক উপচে পড়লেও করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে কিছুটা ভাটা পড়ে পর্যটক আনাগোনায় । যা গত বছর পর্যন্ত বজায় ছিল। তবে চলতি বছরে ফের পর্যটকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। বক্সা, জয়ন্তী, চিলাপাতা, কোদাল বস্তি, জলদাপাড়ার পর্যটন ব্যবসায়ীরা খুশি।
কোর এলাকায় ঘোরার মওকা
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে নতুন গাড়ি এলে পোখরি লেক, চুনিয়াঝরা জঙ্গল, মহাকাল মন্দির সহ বক্সা টাইগার রিজার্ভের ২৬ মাইল ও ২৭ মাইলের মতো কোর এলাকাতেও পর্যটকদের সাফারির গাড়ি নিয়ে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে। যাতে আকর্ষণ আরও বাড়বে বলেই নিশ্চিত স্থানীয় পর্যটন সার্কিট.
বক্সা পর্যটন কেন্দ্রের ৯৫ শতাংশ মানুষের জীবন ধারণের একমাত্র উপার্জনের পথ পর্যটন শিল্প। এই পর্যটন কেন্দ্রে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ জঙ্গল সাফারি। এই জঙ্গল সাফারিকে কেন্দ্র করে জয়ন্তীতে ৫০ টি জিপসি গাড়ি রয়েছে। রয়েছে ৭০ জন ট্যুরিস্ট গাইড। এবং সব মিলিয়ে ৭০ টির মতো হোমষ্টে, লজ, হোটেল রেস্তোরাঁ রয়েছে এই কেন্দ্রে। করোনার পর বিপাকে পরে তারা। তবে গত কয়েক বছরে ফের ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে তারা।