মাছের সঙ্গে কখনওই খেতে নেই দুধ কিংবা দুগ্ধজাত কোনও খাদ্যদ্রব্য। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই বিশ্বাস কি আদৌ সত্য? বিশিষ্ট নিউট্রিশনিস্ট কী বলছেন?
একাধিক পরিবারে বলা হয়, মাছের সঙ্গে কোনওমতেই দুধ কিংবা দুগ্ধজাত দ্রব্য খাওয়া উচিত নয়। কেবলমাত্র ভারত নয়, বিদেশেও মাছ আর দুধ একসঙ্গে না খাওয়া নিয়ে নানা মিথ প্রচলিত রয়েছে।
মনে করা হয়, মাছের সঙ্গে দুধ খেলে কিংবা দুধেরই কোনও প্রোডাক্ট খেলে চামড়ায় সংক্রমণ তৈরি হয়। জানা গিয়েছে, এই দুই জিনিস একসঙ্গে খেলে বিটিলিগো হয়। বলা হয়, দুধ আর মাছ একসঙ্গে খেলে শরীরে সাদা দাগ তৈরি হয়। এই অবস্থাকে চিকিৎসা পরিভাষায় লিউকোডার্মা বলা হয়। চলতি কথায় যাকে আমরা বলি শ্বেতি।
তবে বিজ্ঞানে এই দাবির কোনও সত্যতা নেই। মাছ এবং দুধ একসঙ্গে খেলে শ্বেতি হতে পারে, এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি এখনও পাওয়া যায়নি। মাছের সঙ্গে দুধ খেলে কোনও রোগ হতে পারে, তারও হদিশ মেলেনি।
মুম্বইয়ের জনপ্রিয় নিউট্রিশনিস্ট নীতি দেসাইয়ের মতে, 'এমন কোনও গবেষণা নেই যেখানে দুধ এবং মাছ একসঙ্গে খাওয়ার উপর কোনও বাধা রয়েছে।'
নীতি দেসাই আরও বলেন, 'মাছের সঙ্গে দুধ খেলে লিউকোডার্মা হয়, এটা কেবলমাত্র একটি পুরনো ধ্যানধারণা। এর কোনও সত্যতা নেই।' তবে হ্যাঁ, যে সকল ব্যক্তি ল্যাকটোজ ইনটলারেন্ট, তাঁরা মাছ খাওয়ার পর দুধ খেলে প্রভাব পড়তে পারে।
মাছ এবং দুধ, দু'টোই উচ্চ প্রোটিন সম্পন্ন খাদ্যদ্রব্য। দু'টো একসঙ্গে খেলে আমাদের হজমশক্তির উপর চাপ পড়ে। যদি কারও মনাছ কিংবা দুধে অ্যালার্জি থাকে, তবে দু'টো একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং অন্যটি ল্যাক্টোজ। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই মাছ আর দুধ একসঙ্গে খেলে পেট খারাপ হয়ে যায়।
আবার আয়ুর্বেদে ডেয়ারি প্রোডাক্ট এবং মাছের একসঙ্গে সেবন নিষিদ্ধ। তবে এই সিদ্ধান্তের নেপথ্য কোনও ত্বক সংক্রমণের ব্যাপার নেই। মাছের ত্বক ঠান্ডা হয় এবং দুধ গরম। সে কারণে এগুলি একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়।