ভারতের মহান কূটনীতিক ছিলেন চাণক্য। তেমই অর্থশাস্ত্রেও তাঁর পাণ্ডিত্য অসামান্য। জীবনের নানা বিষয় নিয়ে নীতিকথা লিখে গিয়েছেন চাণক্য। শতাব্দীর পর শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও যার প্রাসঙ্গিকতা এতটুকুও কমেনি। আজও চাণক্যনীতি সমানভাবে প্রযোজ্য। আচার্য চাণক্য বলেছেন, দুষ্ট রাজার শাসনে কেউ সুখ পায় না। প্রতারক বন্ধুর থেকে দূরত্ব রাখা দরকার। তেমই একজন দুষ্ট নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করলে ঘরে সুখ-শান্তি আসে না। যে গুরু অসৎ শিষ্যকে জ্ঞান দান করেন তিনিও অপমানিত হন।
সিংহাদেকং বকাদেকং শিক্ষাশ্চত্বয়ারি কুক্কুদাত
ব্যয়সাতপঞ্চ শিক্ষাশ্চ ষটশুনস্ত্রিণী গর্দভাত
এই শ্লোকে আচার্য চাণক্য বলেছেন, কোনও ব্যক্তির সিংহ, বক, মুরগি, কাক, কুকুর এবং গাধার থেকে কয়েকটি গুণ শিখতে হবে। এই পৃথিবীর প্রতিটি জিনিস এবং প্রতিটি প্রাণী কোনও না কোনও জিনিস শেখায়। এই গুণগুলি শেখার মাধ্যমে জীবনে সাফল্য ও উন্নতি লাভ করা যায়।
প্রভূতং কার্যমল্পং ভ যন্নরঃ কর্তুমিচ্ছতি।
সর্বারম্ভেন তৎকার্য সিংহদেকং প্রচক্ষতে।
সিংহ যা শেখায়- আচার্য চাণক্যের মতে, কাজ ছোট হোক বা বড়, যে কোনও মানুষের উচিত প্রথম থেকেই পূর্ণ শক্তি লাগানো। সিংহের কাছ থেকে এই শিক্ষা নিতে পারি। এর অর্থ হল, মানুষ যে কাজই করুক, তা ছোট হোক বা বড়, তাতে মনোযোগ এবং পুরো শক্তি দেওয়া উচিত। তাতেই সাফল্য মিলবে। সিংহ পুরো শক্তি দিয়ে শিকারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
বক এই শিক্ষা দেয়- বুদ্ধিমান ব্যক্তির উচিত ইন্দ্রিয়কে নিয়ন্ত্রণ করা। সময় অনুযায়ী নিজের ক্ষমতা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা দরকার। বকের মতো কাজকে সম্পন্ন করতে হবে। বক যখন মাছ ধরে তখন এক পায়ে দাঁড়িয়ে মাছ শিকার ছাড়া অন্য কিছুর পরোয়া করে না। বুদ্ধিমান ব্যক্তি যখন কোনও কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করেন, তখন তাঁর উচিত ইন্দ্রিয়কে নিয়ন্ত্রণে রাখা।
মুরগির থেকে ৪টি জিনিস শিখুন- সময়মতো ঘুম থেকে ওঠা, সর্বদা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকা, নিজের বন্ধুদের প্রাপ্য অংশ দেওয়া এবং আক্রমণ করে নিজের খাবার খাওয়া- এই চারটি জিনিস মুরগির কাছ থেকে শেখা উচিত।
কাকের কাছ থেকে এই জিনিসগুলি শিখুন- কাকের কাছ থেকে শেখা উচিত- যৌন মিলন করা, একগুঁয়ে থাকা, সময়ে সময়ে কিছু জিনিস সংগ্রহ করা, সতর্ক থাকা এবং কাউকে পুরোপুরি বিশ্বাস না করা।