সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি ও এর ক্ষতিকর প্রভাব শিশুদের ওপর বাড়ছে। বিশ্বজুড়ে এই সমস্যার সমাধান করতে বেশ কিছু দেশ কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপের কিছু দেশ। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, সরকার ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছে। এতে শিশুদের যেমন মানসিক বিকাশ ও সামাজিক জীবনে প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা কমবে, তেমনই তাদের ভার্চুয়াল জগতের পরিবর্তে বাস্তব জীবনে অংশগ্রহণ বাড়বে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, সোশ্যাল মিডিয়ার অত্যধিক ব্যবহার শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি প্রায় সিগারেট বা অ্যালকোহলের মতো ক্ষতিকারক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সোশ্যাল মিডিয়া শিশুদের উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং আত্মবিশ্বাসের অভাব তৈরি করতে পারে। এছাড়া, সাইবার বুলিং এবং অন্যান্য অনলাইন অপরাধের শিকার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
বিশ্বখ্যাত ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো তাঁর ১২ বছরের ছেলেকে ফোন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচিত হন। তার মতে, শিশুরা প্রযুক্তির প্রতি আসক্ত হলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসও তার সন্তানদের ১৪ বছরের আগে ফোন ব্যবহার করতে দেননি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুরা যাতে ভার্চুয়াল জগতের পরিবর্তে বাস্তব জীবনে সক্রিয় থাকতে পারে, সেজন্য তাদের বিভিন্ন খেলা, বই পড়া, এবং শিল্পকর্মে যুক্ত করা জরুরি। এছাড়া, বাবা-মায়ের উচিত সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং শিশুদের সঙ্গে সময় কাটানো।
বিশ্বজুড়ে শিশুদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ একটি বড় পদক্ষেপ। তবে এটি সফল হতে বাবা-মায়ের সচেতনতা, সামাজিক ও শিক্ষাগত উদ্যোগ, এবং প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন। ভবিষ্যতের প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখতে এই ধরনের উদ্যোগগুলি সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।