জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও খাওয়াদাওয়ার অনিয়মের কারণে কোলেস্টেরল মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। বাড়ছে মানসিক চাপ। সেই সঙ্গে অনিদ্রাও দায়ী। সবমিলিয়ে কোলেস্টেরল এখন ঊর্ধ্বমুখী। আর কোলেস্টেরল শরীর বাড়া মানেই হার্টের অসুখের ঝুঁকি। এমনকি হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত হাতে পারে। তাই কোলেস্টেরলের দিকে নজর দেওয়া উচিত। এখন তো কম বয়সেই শরীরে বাসা বাঁধছে কোলেস্টেরল। সেজন্য আরও সতর্ক হওয়া দরকার। কোলেস্টেরল বাড়লেই তাই সঙ্গে সঙ্গে করুন প্রতিকার। ওষুধ না খেয়ে ঘরোয়া প্রতিকার করলে প্রাকৃতিকভাবেই কমবে কোলেস্টেরল। সেই সঙ্গে জরুরি কী খাচ্ছেন সারাদিনে তার উপর নিয়ন্ত্রণ। চাইলেই যা ইচ্ছে খেয়ে নিলেন সেই দিন আর নেই।
কোলেস্টেরল দু'প্রকারের। খারাপ কোলেস্টেরল কমানোর জন্য এখন ওষুধ খান অনেকে। তবে অতিরিক্ত ওষুধ না খেয়ে প্রাকৃতিকভাবে কমান কোলেস্টেরল। এজন্য দারুণ উপকারী দাওয়াই ইসবগুল। ওষুধের চেয়েও তাড়াতাড়ি কমবে কোলেস্টেরল।খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে অত্যন্ত কার্যকর ইসবগুল। কীভাবে? পুষ্টিবিদরা বলছেন, মানুষের অন্ত্রে একটি পাতলা স্তর তৈরি করে ইসবগুল। ফলে খারাপ কোলেস্টেরল শোষণ করতে পারে না শরীর। সেটা মল দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায়।
একটি গবেষণা বলছে, ১২ সপ্তাহ ধরে ওষুধ-পথ্য খাওয়ার পর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমেছে ০.৪২ mmol/l বা ৮.৭%। সেই জায়গায় আর এক দল রোগীকে দেওয়া হয়েছিল ইসবগুল। প্রতিদিন ৭ গ্রাম ইসবগুল খেতেন তাঁরা। আর একদলকে দেওয়া হয় ১০.৫ গ্রাম ইসবগুল। ০.৪৮ mmol/l বা ৯.৭% কমিয়ে গিয়েছিল এলডিএল কোলেস্টেরল। ইসবগুল ও পরিমিত খাবার ৬ মাসের মধ্যে ৭-৮.৯% কমায় এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা।
কীভাবে ইসবগুল খাবেন? কোলেস্টেরল কমাতে রোজ খান ইসবগুল। তবে তার নিয়ম আছে। এক গ্লাস গরম জলে এক চা চামচ ইসবগুল মিশিয়ে নিন। ডিনার বা রাতের খাবারের পর এভাবে এক গ্লাস ইসবগুল খেয়ে নিন। তার কয়েক মিনিট পর অন্তত ১ গ্লাস জল খান। ১ গ্লাস জলের সঙ্গে রোজ ইসবগুল খেতে পারেন ১০-২০ গ্রাম। এতে কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রতিকার হয়ে যাবে। কমবে খারাপ কোলেস্টেরলও। ইসবগুল খাওয়ার উপকারিতা জানলে চমকে যাবেন-
ইসবগুল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যে থেকে মুক্তি মেলে। উন্নতি ঘটায় হজমেও। সেই সঙ্গে কমে ডায়াবেটিস। শরীরকে ডিটক্স করে ইসবগুল। অর্থাৎ শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ মলের আকারে বেরিয়ে যায়।
যা মাখায় রাখবেন- ইসবগুল খাওয়ার সময় মাথায় রাখবেন প্রথম দিকে পেটে সইতে না-ও পারে। পেট ব্যথা, গ্যাস এমনকি ডায়রিয়া হতে পারে। শুরুর দিকে অল্প অল্প করে ইসবগুল খান, পরে পরিমাণ বাড়ান।