লিভার হল শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা পেটের ওপরের অংশে ডানদিকে অবস্থিত। এটি পিত্ত, কোলেস্টেরল, হরমোন নিঃসরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এনজাইম সক্রিয় করতে সাহায্য করে লিভার। পাশাপাশি এটি ফ্যাট, প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট বিপাক করে। তাই লিভারে কোনও ধরনের গোলযোগ বা রোগ দেখা দিলে তা মারাত্মক আকার ধারণ হতে পারে। লিভারের রোগ প্রতিরোধ করার সবচেয়ে ভাল ও কার্যকরী উপায় হল একটি ভারসাম্যপূর্ণ লাইফস্টাইল। কারণ মনে রাখবেন লিভার ড্যামেজের উপসর্গ সবসময়ই চূড়ান্ত পর্যায়ে না পৌঁছলে দেখা যায় না। এ ছাড়াও এমন অনেক উপসর্গ রয়েছে যেগুলিকে মানুষ সামান্য মনে করে গুরত্ব দেন না। আর তাতেই হয়ে যায় ক্ষতি।
কীভাবে লিভারের রোগ বাড়ে?
লিভার রোগের চারটি ধাপ রয়েছে। প্রথম পর্যায় হল লিভারের প্রদাহ, যা আঘাতের ফলে বা রক্তে টক্সিনের উপস্থিতির ফলো হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে, চিকিৎসা না করা হলে এই প্রদাহ ফাইব্রোসিসে পরিণত হয়। এরপর তৃতীয় পর্যায়ে লিভারের ক্ষতি হয়ে যায় সিরোসিস। এর পরে আসে শেষ এবং চতুর্থ পর্যায়, যেখানে লিভার কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
নখের মধ্যে দেখা যায় লক্ষণ (Cirrhosis Of Liver Symptoms In Nails)
যকৃতের রোগের বেশিরভাগ লক্ষণ শেষ পর্যায়ে দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, রোগীরা সবচেয়ে বেশি যে লক্ষণগুলি দেখতে পান তার মধ্যে একটি হল নখের পরিবর্তন। ২০১০ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, লিভারের রোগে আক্রান্ত প্রায় ৬৮ শতাংশ রোগীর নখে পরিবর্তন দেখা গেছে। একইভাবে, একটি জার্নালে প্রকাশিত ২০১৩ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে ৭২ শতাংশ রোগীর নখের আকৃতি, রঙ, ঘনত্বে পরিবর্তন পাওয়া গেছে। 'ফিঙ্গার ক্লাবিং' লিভার ডিজিজের একটি লক্ষণ হতে পারে। নখের দুই তৃতীয়াংশ পাউডারে পরিণত হওয়াও আরও একটি লক্ষণ।
সিরোসিসের লক্ষণ (Cirrhosis Of Liver Symptoms)
ত্বক এবং চোখের হলুদ হওয়া (জন্ডিস)
রক্ত বমি করা
ত্বকে চুলকানি
গাঢ় রঙের প্রস্রাব
সহজেই চোট পাওয়া
পা বা পেট ফুলে যাওয়া
লিবিডো কমে যাওয়া
কীভাবে লিভার ড্যামেজ বাঁচনো যায়? (Cirrhosis Of Liver Prevention)
বর্তমানে সিরোসিসের কোনও প্রতিকার নেই। তবে এর ক্ষতির পরিমান ধীর করা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা সিরোসিস রোগীদের অ্যালকোহল এবং ধূমপান থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। এছাড়াও, কম সোডিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুন - বডি ম্যাসাজে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, কখন-কীভাবে করাবেন?