বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে থাবা বসায় কয়েকটি অসুখ। এর মধ্যে অন্যতম কোষ্ঠকাঠিন্য। বিশ্বে ৮০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ এর সঙ্গে লড়াই করছে। খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম, বাইরের খাবার ও মানসিক চাপের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। ঠিক সময় চিকিৎসা না করানো হলে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে অর্শ, ফিসচুলা এমনকি ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। তাই আগাম সতর্ক হওয়া জরুরি। বিশেষ করে ডায়েটের খেয়াল রাখা জরুরি। প্রতিদিনের পাতে একই ধরনের খাবার খেলে হজমের ক্ষতি হয়। অর্থাৎ তেল, ময়দা এবং সবজি একই ধরনের হলে সমস্যা তৈরি হয় পেটে। হজমের গণ্ডগোল হলেই দেখা দেয় কোষ্ঠকাঠিন্য। ৫ আয়ুর্বেদিক উপায়ে যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
কোষ্ঠকাঠিন্য এমন একটি অসুখ যার সময়মতো চিকিৎসা করালে সুস্থ হওয়া যায়। তবে অনেকেই নানা ধরনের ওষুধ খেয়েও নিরাময় করতে পারেন না। তাতে সমস্যা আরও জটিল হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে সাময়িক বন্ধ হলেও আবার শুরু হয়ে যায়। অথবা ওষুধের অভ্যাস লেগে যায় মানুষের। যা শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। তাই আয়ুর্বেদিক উপায়ে চিকিৎসা করালে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে পারেন।
ত্রিফলা- কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য ত্রিফলা অন্যতম কার্যকর আয়ুর্বেদিক প্রতিকার। ত্রিফলায় রয়েছে গ্লাইকোসাইড যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ত্রিফলা গরম জলে মিশিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন। ত্রিফলার সঙ্গে আধ চা চামচ ধনে দানা এবং এলাচ যোগ করতে পারেন। এগুলি একসঙ্গে পিষে এক গ্লাসের জলে মিশিয়ে নিন। মলকে নরম করে তা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে।
মৌরি- কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে এক গ্লাস কুসুম গরম জলে এক চা মৌরি মিশিয়ে নিন। মৌরি গ্যাস্ট্রিক এনজাইম তৈরি করতে সাহায্য করে যা হজম প্রক্রিয়াকে বাড়িয়ে তোলে। মৌরি কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়।
বেল - বেলে থাকে রেচক গুণ। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে রাতে খাওয়ার আগে আধ কাপ বেল এক চামচ গুড়ের সঙ্গে খান। বেলের রসে সামান্য তেঁতুলের জল ও গুড় মিশিয়ে বেলের শরবত তৈরি করেও পান করতে পারেন। অতিরিক্ত বেল খাবেন না।
যষ্টিমধু- এতে রয়েছে প্রদাহ-বিরোধী উপাদান যা হজমে সহায়তা করে। এক কাপ গরম জলে এক চামচ যষ্টিমধু এবং এক চামচ গুড় মিশিয়ে খান। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয় যষ্টিমধু।
ঘি ও দুধ- ঘি ও দুধ একসঙ্গে খেলেও উপকার পাবেন। কোষ্ঠকাঠিন্য কমানোর জন্য একসঙ্গে খেতে পারেন। ১ কাপ গরম দুধের সঙ্গে দুচামচ ঘি মিশিয়ে খান। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাবেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে ফাইবার থাকা খাবার খান। সকালের খাবারে রাখুন ওটস। এছাড়া ফল ও সবজি খান। রস খাওয়ার চেয়ে গোটা ফল খান। সারাদিন পরিমিত জল খুব দরকার। দিনভর পর্যাপ্ত জল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাবেন।
আরও পড়ুন- ওষুধেও কমছে না ইউরিক অ্যাসিড? আয়ুর্বেদে বলা হাতের কাছে ৩ পাতায় জব্দ