অফিসে বসে ঠান্ডা এসির মধ্যে রাস্তার ধারের দোকান থেকে আনা গরম আদা চা, শুনতে যেমন আনন্দদায়ক, বাস্তবে ততটাই বিপজ্জনক হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, প্লাস্টিকের পলিথিন বা পাতলা ফয়েলে গরম চা প্যাক করা হলে তার ভেতরের রাসায়নিক পদার্থ গলে গিয়ে চায়ের মধ্যে মিশে যেতে পারে। ফলে অজান্তেই শরীরে প্রবেশ করছে ক্ষতিকর মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং বিষাক্ত যৌগ।
কীভাবে শরীরে ঢুকছে বিপজ্জনক রাসায়নিক?
বাইরে থেকে চা আনতে গেলে অধিকাংশ বিক্রেতা চা প্যাক করেন প্লাস্টিকের পলিথিনে। ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় এই পলিথিনের ভেতরের থ্যালেটস (Phthalates), বিসফেনল-এ (BPA) এবং স্টাইরিন মনোমারের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক গলে গিয়ে চায়ে মিশে যায়। প্রতিদিন অল্প অল্প করে এই যৌগ শরীরে ঢুকলে শুরু হয় হরমোনের অসামঞ্জস্যতা, ইনসুলিন প্রতিরোধ, এমনকি দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
কী ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, পুরুষ ও নারীর উর্বরতা হ্রাস, ওজন বৃদ্ধি, ক্লান্তি ও ঘুমের সমস্যা, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস, স্তন, প্রোস্টেট এবং থাইরয়েড ক্যান্সারের সম্ভাবনা। এই সমস্যাগুলোর মূলে রয়েছে প্লাস্টিকের রাসায়নিক পদার্থের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব, যা শরীরের হরমোনে ব্যাঘাত ঘটায় ও ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
ক্যান্সারের সঙ্গে সরাসরি যোগসূত্র আছে কি?
এখনও পর্যন্ত সরাসরি বৈজ্ঞানিক প্রমাণ মেলেনি যে প্লাস্টিকের পলিথিনে প্যাক করা চা পান করলে ক্যান্সার হয়। তবে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানগুলো ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, এমন আশঙ্কা চিকিৎসক ও গবেষকরা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
গরম চা বা কফি প্লাস্টিকের পলিথিন বা নিম্নমানের প্লাস্টিকের কাপে না খাওয়াই ভালো। কাচ বা স্টিলের ফ্লাস্ক বা কাপ ব্যবহার করুন। যতটা সম্ভব রাস্তার চা এড়িয়ে ঘরে তৈরি চা খাওয়ার অভ্যাস করুন।