
রক্তে শর্করা শরীরে শক্তির প্রধান উৎস, যা খাবার থেকে গ্রহণ করা কার্বোহাইড্রেট থেকে উৎপন্ন হয়। খাবার গ্রহণের পর রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। তবে অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত ইনসুলিন এটি নিয়ন্ত্রণ করে এবং কোষে পাঠায়। যদি ইনসুলিন কম মাত্রায় উৎপন্ন হয় তাহলে রক্তে চিনি জমা হতে থাকে, যার ফলে ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা দেখা যায়।
সকলেই নিজেদের শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। সম্প্রতি দিল্লির ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা: বৃজমোহন অরোরা নিজের উপর একটি পরীক্ষা চালিয়েছেন। যা তাঁর রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দিয়েছে। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে দেখবেন নাকি?
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখার পদ্ধতিটি কী?
ডা: বৃজমোহন অরোরা ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। যেখানে তিনি বলেন, 'আমি সাধারণত বিকেলে ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাঁটি। এর প্রভাব সকলের জানা জরুরি। আমার রক্তে শর্করার মাত্রা বর্তমানে ১০৭, তাই এখন আমি ঠিক ২০ মিনিট হাঁটব। জিমে যাওয়া আমার পক্ষে কঠিন। যদিও আমি রোজ জিমে যাই। তবে এটা সহজ নয়। আমি জিমে ট্রেডমিল ব্যবহার করি কিন্তু আমার খুব একটা ভাল লাগে না। বাজারে হাঁটতে আমার বাল লাগে। এমনকী, যদি আমি কিথু না কিনি তবুও দোকান ঘুরে দেখতে আমার ভাল লাগে। বাজারের কোলাহল, ব্যস্ততা আমার ভাল লাগে। মুখে সূর্যের আলো অনুভব করাটা আমার কাছে ম্যাজিকাল। আমার মনে হয় আমি সোলার সেলের মতো জ্বলে উঠি।'
এরপরই ওই চিকিৎসক হাঁটতে হাঁটতে করা ভিডিওতে বলেছেন, 'পুরো ২০ মিনিট হাঁটা হয়নি, ১৫ মিনিট হয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয় পরীক্ষা করে দেখা উচিত।' নিজের ব্লাড সুগার পরীক্ষা করেন তিনি। দেখা যায় ৯৬ এসেছে মাত্রা। অর্থাৎ মাত্র ১৫ মিনিট হাঁটার পরই তাঁর ব্লাড সুগার মাত্রা অনেকটা কমে গিয়েছে।
চিকিৎসক বলেন, 'এর অর্থ হল, প্রতি মাইল বা ২০ মিনিট হাঁটলে অবশ্যই এর কিছু প্রভাব পড়বে।' তবে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকলে অর্থাৎ HbA1c ৭-এর উপর থাকলে হেঁটে খুব একটা লাভও হয় না।
কী বলছে গবেষণা?
নেচার জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, খাবারের পর ১৫ মিনিট হাঁটা রক্তে শর্করার মাত্রা ২০-৩০% কমাতে পারে। কারণ পেশীগুলি রক্ত থেকে গ্লুকোজ দ্রুত শোষণ করে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ১৫ মিনিট করে দিনের ৩ বার মাঝারি গতিতে হাঁটলে গ্লুকোজের মাত্রা ২২% কমে যায়।