ভাত ডাল কোন দেশের খাবার? যতই গালভরা ফ্যাশনেবল খাবার দিয়ে ডায়েট করুন না কেন, এক থালা গরম ভাত ছাড়া বাঙালির চলে না। ক্রমবর্ধমান ডায়াবেটিসের যুগে যদিও যদিও সকলেই আতঙ্কিত থাকেন অতিরিক্ত ভাত খাওয়া নিয়ে। সপ্তাহে প্রতিদিন ভাত খেয়ে ফেললে রীতিমতো অপরাধবোধে ভোগেন অনেকে।
আসল সমস্যা হল ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা, দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করার সমস্যা এবং অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট এবং কম প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস। যদিও ভাত কিছু মানুষের রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে বলছেন, ভাতের চেয়ে সামগ্রিক বিপাক প্রক্রিয়া অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা এবং PCOS নিরাময়ের বিশেষজ্ঞ ডা: গগনদীপ সিংয়ের মতে, 'ভাত নিয়ে আতঙ্ক বিজ্ঞানসম্মত ভাবে ভুল।' তিনি দীর্ঘদিনের প্রচলিত মিথ ভেঙে ফেলেন এবং ক্লিনাকাল অভিজ্ঞতা এবং বিপাকীয় বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে পরামর্শ দেন।
ডা: গগনদীপ সিং বলেন, 'ভাত নয়, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সই আসল কারণ। আমি এমন অনেক রোগীদের দেখেছি যারা প্রতিদিন এই পরিমাণ ভাত খান। কেউ কেউ হজম করে সুস্থ থাকেন। আবার কেউ কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ায় বিপকীয় সমস্যা সহজেই বুঝতে পারেন।'
২০২০ সালের ডায়াবেটিস কেয়ারে প্রকাশিত একটি গবেষণা উদৃত করে ডা: গগনদীপ সিং বলেন, 'কিছু এশীয় জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে ভাত প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব দেখিয়েছে। অন্যদের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ রয়ে গিয়েছে। যা প্রমাণ করে ভাতকে সর্বজনীন ক্ষতিকারক হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না।'
তিনি ভারতীয়দের মধ্যে ডায়াবেটিসের আসল কারণ হিসেহে দেখিয়েছেন,দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, মাত্রাতিরিক্ত ফ্যাট, কম ঘুম, দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপকে। ভারতীয়দের মধ্যে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৩-৪ গুণ বেশি বলেও জানান এই চিকিৎসক।
ইনসুলিন প্রতিরোধ করেন এমন রোগীদের ক্ষেত্রে সাধারণত ভাত খাওয়ার ৩০ থেকে ৬০ মিনিটের মধ্যে গ্লুকোজের মাত্রা ১৪০-১৮০ মিলিগ্রাম বেড়ে যায়। সুস্থ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই মাত্র ১২০-১৪০ মিলিগ্রাম। অনেকে ওজন কমানোর জন্য বর্তমানে ব্রাউন রাইসের দিকে ঝুঁকছেন কিন্তু চিকিৎসক বলছেন এটি অনিচ্ছাকৃত ভুল।