বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস প্রতি বছর ৪ মার্চ পালন করা হয়। এই দিন অ্যাওয়ারনেস এর জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম এবং সেমিনার আয়োজন করা হয়। বিশ্বজুড়েই যাতে লোক স্থূলত্বের বিষয়ে ডিটেলে জানতে পারেন এবং তারপর তা কম করার জন্য বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ করতে পারেন। পাশাপাশি পরিশ্রমের দিকে ঢুকতে পারেন w.h.o. (ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন) এর বক্তব্য অনুযায়ী পৃথিবীর প্রায় ৩৯ শতাংশ যুবক রয়েছেন যারা ওজন কম করার জন্য হেলদি ডায়েট এর সঙ্গে মার্কেটে পাওয়া বিভিন্ন রকম লো ক্যালোরি ফুড, লো ফ্যাট ফুড, ফ্যাট ফ্রি খাবার কিনে সেবন করেন।
যারা এই খাবার খায়, তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এই ফুড এর সেবন করার পরও ওজন কম হওয়ার বদলে উল্টো বাড়তে শুরু করে। কারণ এ সমস্ত প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য এ সমস্ত চমকদার লাইন লেখা হয়। কিন্তু তা আদৌ কোনও কাজে লাগে না। উদাহরণ এর জন্য মার্কেটে পাওয়া কিছু জিনিস যেগুলি হেলদি মনে করে আমরা খাই, চিনি, চকলেট, প্রিজারভেটিভ মেলানো থাকে। ওজন বাড়ানোর অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করে। যদি এ ধরনের খাদ্যবস্তু খাওয়া বা সেবন করা যায়, তাহলে ওজন বাড়তে শুরু করে। এই কারণে আর এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের কিছু জিনিস এমন জানিয়ে দেব, যেগুলি হেলদি এবং ফ্যাট এবং ওয়েট বাড়ানোর কারণ হবে না।
লো ফ্যাট ফ্লেভার দই
দই ওজন কম করার জন্য অন্যতম সহায়ক বিষয়টি আমরা সবাই জানি। কিন্তু ওই দই সাদা হতে হবে। কারণ তার মধ্যে প্রোটিন অত্যধিক মাত্রায় পাওয়া যায়। কিন্তু যদি কেউ মার্কেটে পাওয়া ফ্লেভার দই ওজন কম করার জন্য খান, তাহলে এটি উল্টো কাজ করতে শুরু করে। আসলে কিছু রিপোর্ট জানিয়েছে যে বেশির ভাগ ফ্লেভার্ড দইতে এক্সট্রা সুগার মেলানো হয় যা ওজন বাড়িয়ে দেয়। একটা স্টাডির হিসেবে জানা গিয়েছে যে ১ কাপ ফ্লেভার্ড দইতে ৭ চামচ চিনি অথবা ২৯ গ্রাম চিনি পাওয়া যায়।
স্মুদি এবং প্রোটিন শেক
মার্কেটে পাওয়া যাওয়া আর্টিফিশিয়াল স্মুদি এবং প্রোটিন শেক এর মার্কেটিং এর দুনিয়ায় অত্যন্ত সুনাম রয়েছে। বাচ্চা থেকে বড় সকলেই প্রোটিন শেক খেতে ভালোবাসেন। যে কারণে ঘরে তৈরি করা ন্যাচারাল স্মুদি পান করার বদলে মার্কেটে পাওয়া প্যাকেজ স্মুদি এবং প্রোটিন শেক খান। স্টাডি অনুযায়ী আগে থেকে তৈরি করে রাখায় এক বোতল অর্থাৎ ৪৫০ মিলিলিটার শেকে প্রায় ১৪ চামচ অর্থাৎ ৫৫ গ্রাম চিনি থাকে। যা অন্য একটি স্টাডি রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে প্রোটিন থেকে প্রায় ৪০০ ক্যালরি পাওয়া যায়। এজন্য কখনও আগে থেকে তৈরি করা স্মুদি এবং শেক খাওয়া উচিত নয়। না হলে ওজন কম হওয়ার বদলে বেশি হয়ে যেতে পারে।
নারকেলের জল
নারকেলের জল পৃথিবীর সবচেয়ে পপুলার ড্রিঙ্ক এর মধ্যে একটি। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, মিনারেল ভরা থাকে। কিন্তু যদি আমরা মার্কেটে পাওয়া প্যাকেজ নারকেলের জল খাই, তাহলে এটি সুগার মেলানো থাকে এবং হেলদির চেয়ে আনহেলদি বেশি হয়য এ কারণে বেশি নির্ভর করা ভালো নয়।
প্যাকেজড জুস
মার্কেটে যে প্যাকেজ জুস আছে তা বড় বড় শব্দ লেখা থাকে, ন্যাচরাল জুস। এই শব্দটি পড়েই আমরা সবাই তা কিনে নিয়ে এবং তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করি। আমাদের মনে করা উচিত যে তার মধ্যে জুস থাকে। তা ন্যাচারালও হতে পারে। কিন্তু তার মধ্যে লম্বা সময় পর্যন্ত টিকিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক, প্রিজারভেটিভ, মিষ্টি অ্যাড করা হয়। যা ওজন কম করার বদলে আরও বাড়িয়ে দেয়। সঙ্গে এটি সেবন করলে শরীরে অত্যন্ত বেশি ক্যালরি সরবরাহ করে। যা ওজন বাড়িয়ে দেওয়ার অন্যতম কারণ।
প্রোটিন বার
ওজন কম করার জন্য প্রোটিনের ইনটেক বাড়িয়ে দেওয়া জন্য বহু লোক প্রোটিন বার খাওয়া শুরু করেন। এই প্রোটিন বার ক্যালরিতে অত্যন্ত উঁচুমানের। অর্থাৎ এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে। একটি লম্বা সময় টিঁকিয়ে রাখার জন্য রাসায়নিক প্রয়োগ করার মত তার মধ্যে কিছু থাকে। উদাহরণের জন্য একটি প্রোটিন বারে প্রায় 6 চামচ অর্থাৎ ৩৪ গ্রাম সুগার পাওয়া যায়। এ জন্য এটি সেবন না করাটাই ভালো।
গ্র্যানোলা
ওজন কম করার জন্য অনেকেই গ্রানোলার ব্যবহার করেন। হতে পারে যে আপনি ওগুলা খান। কিন্তু আপনার এই বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত যেন রাতে ওর মধ্যে সুগার ভালো মাত্রায় দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রয়োগ করার চিনি হেলদি গ্রানোলাকে আনহেলডি বানিয়ে দেয়। এ কারণে মার্কেটে পাওয়া যাওয়া গ্রানোলার থেকে ঘরে যদি বানিয়ে নিতে পারেন তাহলে তা অত্যন্ত ভালো এবং চিনি না দিতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়।
সুগার ফ্রি কুকি বা বিস্কুট
সুগার ফ্রি-এর নামে বাজারে কুকি এবং বিস্কুট বিক্রি হয়। কিন্তু এই বিস্কুটে ময়দা এবং পামওয়েল মেশানো থাকে। যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক সঙ্গে তার মুখের ফ্যাট এবং লবণের মাত্রা অত্যন্ত বেশি থাকে। বেশি সেবন করলে শরীরে ফ্যাটের মাত্রা বেড়ে যায়, যা ওজন কম তো করেই না বরং বাড়াতে শুরু করে।