
অনেকেই অজ্ঞতাবশত এমন কাজ করে ফেলেন, যার কারণে তাঁকে পরবর্তীকালে অনুতপ্ত হতে হয়। কিছু লোক রয়েছেন, যাঁরা ভুল কাজ করেন বা ভুল সিদ্ধান্ত নেন এবং কেউ তাঁদের না বলা পর্যন্ত তাঁরা এটি সম্পর্কে জানেন না। আপনিও হয়তো এমন অনেক সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ নিয়েছেন, যেগুলো নিয়ে আপনি যদি সঠিকভাবে চিন্তা করেন, তাহলে বুঝবেন যে যদি সেই কাজটি না করতেন, তাহলে আজ আপনার জীবনটা অন্যরকম হতো। এমন ভাবনাচিন্তা অনেকের মধ্যেই আসে। আজ আমরা এমন কিছু অনুশোচনা বা ভুল সিদ্ধান্তের কথা বলছি, যা বেশিরভাগ মানুষই নিয়ে থাকেন এবং আপনার সেগুলি এড়িয়ে চলা উচিত।
স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা
অনেকেই মনে করেন, আমার যখন কোনো শারীরিক সমস্যাই নেই, তাহলে ওজন বাড়ানো বা বাজে লাইফস্টাইলের দিকে মনোযোগ দেব কেন? তারপর যখন ওজন বৃদ্ধি বা অন্য কারণে শারীরিক সমস্যা আসতে শুরু করে, তখন তাঁরা আফসোস করেন যে আমি যদি সেই সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতাম, এই ভেবে। অতএব, সর্বদা আপনার স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ দিন, যাতে আপনি পরে অনুশোচনা না করেন।
ছোটবেলার বন্ধুদের থেকে দূরে সরে যাওয়া
সাধারণত শৈশব বা স্কুলের বন্ধুরা আমাদের কাছে বিশেষ কাছের হয়। এর পরে কেরিয়ার গড়ার সময়ে বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ তেমন থাকে না। শুরুতে যোগাযোগ রাখলেও কিছুদিন পর কাজ, পড়াশোনা ইত্যাদির কারণে অনেকেই সময় দিতে পারেন না। ফলে অনেকেরই মনে হয় যে, "যদি আমরা আমাদের আগের দিনগুলোতে ফিরে যেতে পারতাম, যে সময়ে আমরা কত ভালো ছিলাম," এমন চিন্তা ভাবনা আসে। এ জন্য বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন এবং সময় দেওয়ার চেষ্টা করুন।
ভালবাসার মানুষের সঙ্গে বিচ্ছেদ
এটা আমাদের অধিকাংশের জন্য অত্যন্ত আফসোসের বিষয় যে, তাঁরা এমন একজনকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন যিনি তাঁকে খুব ভালোবাসতেন। হয়তো দুজনের বোঝাপড়ার কারণে বা অন্য কোনো কারণে আপনার ভালোবাসা ভেঙ্গে গেছে, কিন্তু সে আপনার থেকে দূরে চলে গেছে বলে আফসোস সবসময়ই থাকবে। অতএব, সম্পর্কের মধ্যে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে দেবেন না, যার কারণে আপনাকে পরে অনুতপ্ত হতে হবে।
সঠিক সময়ে টাকা না জমানো
অনেকেই চাকরি পাওয়ার অনেক বছর পর পর্যন্ত সঞ্চয় শুরু করেন না। পরে অনুশোচনা করে এই ভেবে যে যদি সামান্য সঞ্চয় দিয়ে শুরু করতেন আগে তবে একটা ভাল টাকার পরিমাণ ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসে কিংবা অন্য কোথাও জমা হত।
নিজেকে বিশ্বাস না করা
এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁরা নিজেদের বিশ্বাস করেন না। যাঁর কারণে তাঁরা কিছুই করতে পারেননি। অনেক সময় নিজের প্রতি আস্থা না থাকার কারণে, মানুষ কিছু কাজ এড়িয়ে যান বা সেটি সম্পূর্ণ হয় না। পরে তিনিই আবার বুঝতে পারেন সে যদি নিজের উপর একটু বিশ্বাস রাখতেন, তাহলে আজ অন্য কিছু হতো। তাই নিজেকে বিশ্বাস করা বন্ধ করবেন না।
স্বপ্নের চাকরি ছেড়ে দেওয়া
অনেক সময় মানুষ কিছু পারিবারিক সমস্যা বা অন্যান্য কারণে তাঁদের স্বপ্নের চাকরি ছেড়ে দেন, যার জন্য তাঁরা আজীবন আফসোস করেন। অনেক সময় পরে তাঁরাও ভাবেন যে পরিস্থিতির সঙ্গে সেইসময়ে যদি একটু মানিয়ে নিতেন তাহলে আজ সেই চাকরিটা তাদের হাতেই থাকত।
পড়াশোনা মাঝপথে ছেড়ে দেওয়া
ভালো চাকরির কারণে অনেকেই পড়াশোনা মাঝপথে ছেড়ে দেন। তারপর যখন তাঁর মনে হয় চাকরির পাশাপাশি পড়াশোনাকেও গুরুত্ব দিতে হবে। এর পর অনুশোচনা ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। এজন্য পড়ালেখাকেও গুরুত্ব দিন, কারণ পড়ালেখা কখনই নষ্ট হয় না, সব সময়ই আপনাকে জীবনে এগিয়ে নিয়ে যায়। তাই পড়াশোনা ও চাকরির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।