জাঁকিয়ে শীত পড়া মানেই অনেকের মনেই উষ্ণতার খোঁজে মদ্যপানের ইচ্ছা জাগতে শুরু করে। শরীর গরম করতে অনেকেই মদ্যপানের উপর ভরসা রাখেন। তবে শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে মদ্যপান বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি! বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতে অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন হৃদ যন্ত্রের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর!
দিল্লির মৌসম ভবন সূত্রে আগেই সতর্ক করা হয়েছে যে, সোমবার থেকে উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানা, পঞ্জাব এবং রাজস্থানে 'মারাত্মক' শৈত প্রবাহ শুরু হবে। এই সময়ে, ফ্লু, সর্দি-কাশি, নাক থেকে রক্তপাতের মতো সমস্যা হওয়ার ঝঁকি বেশি থাকে এবং দীর্ঘক্ষণ ঠান্ডায় থাকার কারণে ত্বকেরও নানা সমস্যা বাড়তে পারে। এই শৈত প্রবাহ থেকে বাঁচতে অ্যালকোহল সেবন থেকেও বিরত থাকতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঠাণ্ডা থেকে বাঁচতে মদ্যপান করলে কী কী সমস্যা হতে পারে? এ প্রসঙ্গে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ অরিন্দম পাণ্ডে জানান, মদ্যপানের ফলে আমাদের হাত-পায়ে রক্ত সঞ্চালন অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। তার উপর মদ্যপানের ফলে সাময়িক উষ্ণ বোধ হওয়ার ফলে অনেকেই ঠাণ্ডা থেকে বাঁচতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেন না। ফলে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বাইরের শীতল তাপমাত্রার সংস্পর্শে এসে দ্রুত কমতে শুরু হরে।
ডঃ পাণ্ডে জানান, এই গোটা ব্যপারটার জন্য মূলত দায়ি, ভ্যাসোডায়লেশন (Vasodilation)। ঠাণ্ডায় মদ্যপান করলে ভ্যাসোডায়লেশন (Vasodilation) হয়ে যায়। ভ্যাসোডায়লেশন হল রক্তনালীগুলির একটি প্রশস্তকরণ, যেগুলি সাধারণত ত্বকের পৃষ্ঠের কাছাকাছি থাকে এবং বাইরের উষ্ণতার সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে রক্ত প্রবাহকে বাড়িয়ে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমতে থাকে। শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হারে কমে গিয়ে একটা সময় হাইপোথার্মিয়ার (Hypothermia) মতো অবস্থা তৈরি করতে পারে। এই হাইপোথার্মিয়ায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া হঠাৎ বন্ধ হয়ে গিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
ডঃ পাণ্ডে জানান, ঠাণ্ডা থেকে বাঁচতে মদ্যপান করলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি প্রায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। হাইপোথার্মিয়ায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া হঠাৎ বন্ধ হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই ঠাণ্ডা থেকে বাঁচতে মদ্যপান কখনওই নয়।