
বর্তমান সময়ে ফ্যাটি লিভার একটি সাধারণ কিন্তু ক্রমবর্ধমান বিপজ্জনক রোগে পরিণত হয়েছে। আধুনিক জীবনযাত্রা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার কারণে লিভারে চর্বি জমে যাওয়া এখন অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। কিন্তু আপনি কি জানেন, আয়নায় তাকিয়ে নিজেই প্রাথমিকভাবে ফ্যাটি লিভারের ইঙ্গিত খুঁজে পেতে পারেন? এমনই এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন দেশের অন্যতম শীর্ষ হেপাটোলজিস্ট ও গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট, ডাঃ শিবকুমার সারিন, যিনি বর্তমানে ইনস্টিটিউট অফ লিভার অ্যান্ড বিলিয়ারি সায়েন্সেস (ILBS)-এর পরিচালক।
আয়নায় কী খুঁজবেন?
ডাঃ সারিনের মতে, 'একজন মানুষ তার ঘাড়ে কালো রেখা বা দাগ দেখে বুঝতে পারেন যে তার শরীরে বিপাকীয় ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ তৈরি হয়েছে।' তিনি বলেন, 'আমি মানুষকে বলি, আয়নার সামনে দাঁড়ান, নিজের ঘাড়ের দিকে তাকান। যদি দেখেন ঘাড়ের পিছনে বা পাশে গাঢ়, মখমল ধরনের কালো দাগ রয়েছে, তবে এটি কেবল প্রসাধনগত সমস্যা নয়, এটি ডায়াবেটিস বা ফ্যাটি লিভারের প্রাথমিক লক্ষণও হতে পারে।'
কী এই কালো দাগ?
চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই অবস্থাকে বলা হয় অ্যাক্যানথোসিস নিগ্রিকান। এটি এমন একটি ত্বকের সমস্যা যেখানে ত্বক ঘন, গাঢ় এবং মসৃণ হয়ে যায়। সাধারণত এটি ঘাড়ে দেখা যায়, তবে বগল, কুঁচকি বা আঙুলের গাঁটেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই দাগ আসলে শরীরের ভেতরে তৈরি হওয়া ইনসুলিন প্রতিরোধের প্রতিফলন, যা নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার (NAFLD) এবং ডায়াবেটিসের সূচক হতে পারে।
ফ্যাটি লিভারের প্রকার ও কারণ
ফ্যাটি লিভারের দুটি ধরন রয়েছে: নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার (NAFLD) স্থূলতা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ডায়াবেটিস ও অলস জীবনযাত্রার কারণে।
অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার (AFLD) অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে।
সতর্ক সংকেত ও চিকিৎসা
শুরুর দিকে এই রোগের কোনও দৃশ্যমান উপসর্গ নাও থাকতে পারে। তবে সময়ের সঙ্গে ক্লান্তি, পেট ভারী লাগা, হজমে অসুবিধা প্রভৃতি সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসা না করলে এটি সিরোসিস বা লিভার ফেইলিওর-এর মতো মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছাতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়
নিয়মিত ব্যায়াম ও সক্রিয় জীবনযাপন
তেল-চর্বি কম এবং ফাইবারযুক্ত খাদ্য গ্রহণ
অ্যালকোহল সম্পূর্ণ পরিহার
নিয়মিত লিভার ফাংশন টেস্ট ও মেডিক্যাল চেকআপ