
পাইলস বা অর্শ এমন একটি সমস্যা যা নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে গিয়ে অনেকেই লজ্জার সম্মুখীন হন। এ রোগ হলে মানুষ আশেপাশের মানুষকে জানায় না, চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছেও যায় না। পাইলসকে বাংলায় অর্শ বলা হয়। পাইলসের কারণে রোগীর মলদ্বারের বাইরে ও ভিতরের অংশ ফুলে যায়। এ ছাড়া অনেক সময় মলত্যাগের সময় রক্তপাতসহ ব্যথার সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্যার কারণে মল পাস করার সময় এবং বসার সময় অনেক সমস্যা হয়।
পাইলসের কারণ
পাইলস রোগ যে কোন বয়সের মানুষের হতে পারে। পাইলসের প্রধান কারণ হল কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাসের সমস্যা এবং হজমের সমস্যা। এ ছাড়া আপনার পরিবারের কারও যদি পাইলসের সমস্যা থাকে, তাহলেও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
পাইলস রোগীদের এসব খাবার খাওয়া উচিত নয়
ডিপ ফ্রাইড এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার- প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন ফ্রোজন মিট, ফাস্ট ফুড এবং ডিপ ফ্রাইড খাবার হজম হতে অনেক সময় নেয়। এগুলোর মধ্যে পুষ্টির পরিমাণ নগণ্য, অন্যদিকে লবণ ও অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটের পরিমাণ অনেক বেশি। এই সবের কারণে দুর্বল হজম এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়ে।
মশলাদার খাবার- মশলাদার খাবার অনেকেরই পছন্দ। কিন্তু আপনার যদি পাইলসের সমস্যা থাকে, তাহলে মশলাদার খাবার আপনার জন্য খুবই বিপজ্জনক প্রমাণিত হতে পারে। এ ধরনের খাবার খেলে পাইলসের রোগীদের মলত্যাগের সময় অসহ্য যন্ত্রণার সম্মুখীন হতে হয়। আপনার রক্তপাতও হতে পারে।
অ্যালকোহল- পাইলসের সমস্যা থাকলে অ্যালকোহল একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। অ্যালকোহল শুধু পরিপাকতন্ত্রে বাধা দেয় না, অন্ত্রে ডিহাইড্রেশনের সমস্যাও বাড়িয়ে দেয়।
দুগ্ধজাত পণ্য- দুগ্ধজাত প্রডাক্ট সেবনের কারণে অনেককেই গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেট ফাঁপার সমস্যায় পড়তে হয়। দুধ, পনির এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত দ্রব্য পাইলসের সমস্যা বাড়াতে কাজ করে। এমন পরিস্থিতিতে আপনি সারাদিনে কতটা দুগ্ধজাত খাবার খাচ্ছেন সেদিকে খেয়াল রাখুন।
কাঁচা ফল- পাইলসের সমস্যা থাকলে ফল আপনার জন্য উপকারী প্রমাণিত হয়। তবে মনে রাখবেন শুধুমাত্র সম্পূর্ণ পাকা ফল খাওয়া উচিত। কলা ইত্যাদি কাঁচা ফল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়ে। যার কারণে পাইলস রোগীদের সমস্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। এক্ষেত্রে ভালোভাবে পাকা ফল খান।
রিফাইন্ড সিরিয়াল- রিফাইন্ড সিরিয়াল যেমন সাদা ভাত, সাদা রুটি, কুকিজ এবং কেক ইত্যাদিতে খুব অল্প পরিমাণে ফাইবার পাওয়া যায়। এমন পরিস্থিতিতে মিহি শস্যের পরিবর্তে গোটা শস্য খান।
বেশি লবণযুক্ত খাবার- চিপস বেশির ভাগ মানুষই পছন্দ করেন। বাজারে যেসব জিনিস পাওয়া যায় তার বেশির ভাগেই লবণের পরিমাণ বেশি থাকে। এমন অবস্থায় আপনার যদি পাইলসের সমস্যা থাকে, তাহলে বেশি করে নোনতা খাবার খেলে আপনার শরীরে জলের অভাব দেখা দেয়, যার কারণে আপনার রক্তনালীগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে শরীরের বাকি অংশেও এর খারাপ প্রভাব পড়ে।
বেশি ফাইবার- অনেকেই বলেন যে পাইলসের সমস্যা হলে হাই ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু এটা একেবারেই ভুল। আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকে তাহলে হাই ফাইবার খাবার খেতে পারেন, কিন্তু সঙ্গে পাইলসের সমস্যা থাকলে এই ভুলটি করা থেকে বিরত থাকুন। পাইলস রোগীদের সীমিত পরিমাণে ফাইবার খাওয়া উচিত।
পাইলস রোগীদের জন্য কিছু টিপস