বর্তমান জীবনযাপনে কোষ্ঠকাঠিন্য সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অসুখে অন্ত্রে মল জমতে থাকে। তা বাইরে বের হয় না। কোষ্ঠকাঠিন্যে মল শক্ত হয়। সপ্তাহে তিন দিন মল নির্গত হয় না। এমন অবস্থাতেই বলা হয় কোষ্ঠকাঠিন্য। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা যে কোনও বয়সেই হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে পরিপাকতন্ত্র নষ্ট হয়ে যায়। শরীর থেকে মলত্যাগ কমে। এই মল অন্ত্রের ভিতরে পচতে থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শৌচালয়ে বসে থাকতে হয়। তবুও পেট পরিষ্কার হয় না। মল শক্ত হয়ে যায়। মলদ্বারে রক্তপাতও হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে অর্শ, এমনকি ক্যানসারের মতো অসুখে আক্রান্ত হতে পারেন কোনও ব্যক্তি। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দিতে অব্যর্থ আয়ুর্বেদিক দাওয়াই।
দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে খিদে লাগে না, বুকে জ্বালাপোড়া, পেট ভারী ভাব, বমি বমি ভাব এবং বমি হয়। কখনও কখনও অন্ত্রে ক্ষত তৈরিও করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য হতে পারে অর্শ বা পাইলস। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে হলে খাদ্যাভ্যাসের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। সেই সঙ্গে খেতে হবে বেশি করে জল।
যোগগুরু বাবা রামদেবের মতে,কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর হরিতকি বা হরদ। এই ভেষজ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অন্ত্রে জমে থাকা মলও দূর হয়। হরদ সেবন করলে গলা থেকে কোলন পর্যন্ত মল পরিষ্কার হয়। চলুন জেনে নিই কীভাবে হরদ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং কীভাবে খাবেন-
কীভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে-
হরিতকি খেলে অন্ত্রে জমে থাকা মল দূর হয়। হরিতকি একটি ভেষজ যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। হরিতকি খেলে বমি, বমি বমি ভাব থেকেও মুক্তি মেলে। হরদ খেলে পাকস্থলী পরিষ্কার হয়। মুখ থেকে মলদ্বার পর্যন্ত ময়লা পরিষ্কার করে হরিতকি। মলের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয়।
হরিতকি পাউডার কীভাবে তৈরি করবেন-
মুদি দোকানে সহজেই কেনা যায় হরিতকি। এর পাউডার বানিয়ে খাওয়া যায়। হরিতকি পিষে নিতে একটি প্যানে সামান্য রান্নার তেল বা এক চামচ দেশি ঘি দিয়ে ভেজে নিন। ভাজার সময় নাড়তে থাকুন। ফুলে উঠলে প্যান থেকে নামিয়ে নিন। ঠান্ডা করে ভাল করে পিষে গুঁড়ো করে নিন। একটি পাত্রে রেখে দিন।
কীভাবে হরিতকি খাবেন-
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে এক গ্লাস জলে আধা চা চামচ হরদ পাউডার মিশিয়ে নেড়ে খেয়ে নিন। চাইলে এতে সামান্য নুনও মেশাতে পারেন। হরিতকির পাউডার দিয়ে জল খাওয়ার ২ ঘন্টা পর পেটের মল শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে। খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটুন। বসবেন না। আধ ঘণ্টার মধ্যে পেটে চাপ অনুভব করবেন। দুই ঘন্টার মধ্যে পেট পরিষ্কার হয়ে যাবে। নিয়মিত খেলে পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি হয়।