ভাতের পাতে কাঁচা পেঁয়াজ অনেকেই খেয়ে থাকেন। আবার অনেকে স্যালাডে পেঁয়াজ দিয়ে খান। শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য কাঁচা পেঁয়াজ খুবই উপকারী। যদিও অনেকেই এই কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। কিন্তু এই আমিষ সবজি কাঁচা খেলে দারুণ উপকার পাওয়া যায়। আয়ুর্বেদে কাঁচা পেঁয়াজের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি শরীরের সঙ্গে ত্বক ও চুলের জন্য ভীষণভাবে উপকারী। একে গরিবের ওষুধ বলা হয়ে থাকে।
আয়ুর্বেদে পেঁয়াজের মাহাত্ম্য
বাতের রোগে খুবই কার্যকর পেঁয়াজ। এতি শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে, মানসিক চাপ এবং জয়েন্টের ব্যথা কমায়। আয়ুর্বেদ অনুসারে, পেঁয়াজ নিয়মিত খেলে খিদে, হজম শক্তি উন্নত করে এবং পুরিষের শুক্রানুর সংখ্যাও উন্নত করে। পেঁয়াজের রস কানের ব্যথায় উপকারী, ঘিয়ে ভাজা পেঁয়াজ কাশি, হাঁপানি এবং সর্দিতে উপকারী। তাজা পেঁয়াজের রস নাক থেকে রক্তপাত বন্ধ করতে সহায়ক। পেঁয়াজ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
আধুনিক বিজ্ঞানে পেঁয়াজের উপকারিতা
পেঁয়াজে পাওয়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যেমন কোয়ারসেটিন এবং সালফার যৌগ, শরীরের জন্য উপকারী। হৃদরোগ নিরাময়ে পেঁয়াজ খুবই উপকারী। এটি রক্তচাপ কমায়, প্রদাহ কমায় এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে। পেঁয়াজ নিয়মিত খেলে হার্টের অসুখের ঝুঁকি কমে। পেঁয়াজ ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। এতে উপস্থিত ফ্ল্যাভোনয়েড ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে। এটি কোলন এবং স্তন ক্যান্সারের জন্য বিশেষভাবে উপকারী বলে বিবেচিত হয়।
পেঁয়াজে কী কী আছে
পেঁয়াজের লাল রঙে পাওয়া অ্যান্থোসায়ানিন যৌগ ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়ক। পেঁয়াজ ডায়াবেটিসের জন্যও উপকারী কারণ এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় এবং লিভারে চিনির বিপাক উন্নত করে। পেঁয়াজকে পেটের স্বাস্থ্যের জন্য একটি ভাল প্রিবায়োটিক উৎস হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এতে থাকা ফাইবার ভালো ব্যাকটেরিয়াকে উৎসাহিত করে, যা পাকস্থলীর দেয়ালকে শক্তিশালী করে, প্রদাহ কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পেঁয়াজ হাড়ের জন্যও উপকারী বলে বিবেচিত হয়। এতে পাওয়া যৌগগুলি অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া, পেঁয়াজে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এতে পাওয়া সালফার যৌগগুলি ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে সাহায্য করে।