কখনও কখনও সবার জীবনে এমন সময় আসে, যখন ঐ ব্যক্তি চাইলেও তার মানসিক সমস্যা থেকে দূরে সরে আসতে পারেন না। পারিবারিক, সামাজিক, পারিপার্শ্বিক চাপ এমনভাবে মাথার উপর চেপে বসে, জয়ী ব্যক্তি তখন পরিস্থিতির শিকার হয়ে পড়েন। নিজের মানসিক চিন্তা বা দুশ্চিন্তা থেকে বের হওয়া সব সময় সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা সম্ভব হয়না এবং সে কারণে তার প্রভাব তার কার্য ক্ষমতার ওপর পড়ে। তার মানসিকতার ওপর পড়ে। পারিপার্শ্বিককে নেগেটিভ হয়ে পড়ে। তখন বেঁচে থাকাই মনে হয় অর্থহীন। অনেকে চাপ নিতে না পেরে আত্মঘাতী হয়ে পড়েন।
যার জন্য সবার আগে নিজে ব্যাপারটি বোঝা জরুরি। এখন আপনি নিজের জীবনে যদি কোনও জিনিস নিয়ে এত বেশি গুরুত্ব দেন, তাহলে সেটি আপনার জীবনে এফেক্ট তো করবেই, কিন্তু যদি আপনি এই সমস্ত কয়েকটি জিনিস নজর রাখেন, তাহলে আপনার মানসিক চাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং আপনি স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে অনেকটাই পারবেন। মানসিক চাপ থেকে বেরিয়ে আসার এই সহজ কয়েকটি পন্থা আপনাকে বাতলে দিচ্ছি, যা, আপনাকে কোনও রকম বিপদে ঋজু রাখবে এবং আপনি চাপে ভেঙে পড়বেন না।
আরও পড়ুন ঃ এভাবে জল খাওয়া মারাত্মক ঝুঁকির, ভুলেও এভাবে করবেন না জলপান
সোজা হয়ে চলুন
গবেষণায় প্রমাণ হয়ে গিয়েছে যে যখন আপনি মাথা উঁচু করে সোজাভাবে মেরুদন্ড সোজা রেখে চলবেন, তখন আপনার শরীরে পজিটিভ এনার্জি প্রবাহিত হবে। এই কারণে আপনাকে তখন সোজা হয়ে চলতে হবে।
শরীরের ঘাম ঝরিয়ে ফেলুন
যখন আপনি মানসিকভাবে তোলপাড় অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, তখন আপনি শারীরিক চর্চা করুন। আপনার সুবিধামতো সকাল-বিকেল একটা সময় বেছে নিয়ে শরীরচর্চায় ঘাম ঝরিয়ে নিন। নেতিবাচক প্রভাব শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে।
সম্পর্ক বুঝে দূরে থাকুন
টানাপোড়েনের সম্পর্ক যাদের সঙ্গে, তাদের কাছ থেকে একটু দূরত্ব বজায় রাখুন। যাদের সঙ্গে আপনার মূল সমস্যা বা যাদের নিয়ে আপনার চিন্তা, তাদের চেয়ে কিছুদিন একটু দূরত্ব বজায় রাখুন। খুব জরুরি কথাবার্তা ছাড়া বাকি কথা এড়িয়ে চলুন।
সময় মতো ঘুমিয়ে পড়ুন
ঘুম ঠিকমতো না হলে এই মানসিক চাপ আরও বাড়তে থাকে এবং তার শরীরে প্রভাব ফেলে। তাই প্রয়োজন হলে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ১০ মিনিট আগেই বিছানায় চলে যান এবং উল্টো গুনতি করতে করতে মানসিক স্থিরতা নিয়ে আসুন। ঘুম তো আসবেই এবং আপনার শরীরের এবং মানসিক চাপ অনেকটাই কমিয়ে আনবে।
হারিয়ে যাওয়া শখ- অনুশীলন করুন
যখন আপনি পারিপার্শ্বিক-এ ব্যতিব্যস্ত হয়ে নিজে বিধ্বস্ত হয়ে পড়বেন, তখন আপনি নিজের ভালোলাগা গুলিকে কয়েকটি বেছে নিয়ে তাতে সময় দিন। সিনেমা দেখা, গান শোনা, খেলাধুলা বা অন্য কোনও উপায়ে যদি আপনি নিজেকে রিফ্রেশ করতে পারেন, বা আপনার হবি যা রয়েছে, যেগুলো নিয়মিত চর্চা করা হয় না, সেগুলিতে মনোযোগ দিন।
ডিজিটাল ডিভাইস থেকে একটু দূরত্ব রাখুন
ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল ডিভাইস থেকে একটু দূরত্ব রাখতে হবে। ফেসবুক-টুইটার-ইনস্টাগ্রামের মত সোশ্যাল সাইটে বেশি মনোযোগ দেবেন না। যদি ডিজিটাল ডিভাইস এর উপর আপনার কর্মজীবন জড়িয়ে থাকে তাহলে সেটুকু বাদ দিয়ে বাকি সময়ে তা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।
একসঙ্গে একটিই কাজ করুন
দৌড়ঝাঁপ এর মধ্যে কাজ করতে হলেও একসঙ্গে একটিই কাজ করুন। দু'তিনটে কাজ নিয়ে বসবেন না এবং একটি কাজ শেষ করে আরেকটি কাজ ধরুন। অফিসের কাজ একসঙ্গে একাধিক থাকলে তা বুদ্ধি করে একের পর এক সাজিয়ে ফেলুন।
এই টিপগুলি প্রত্যেকের জীবন অনুযায়ী আলাদাভাবে কার্যকর হতে পারে। তবে সবগুলি অনুশীলন করতে পারলে, সাতদিনে পার্থক্য নজরে আসবে।