দিন কয়েক আগেই বাংলাদেশ সরকার পুজো উপহার হিসাবে ১২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়। ইতিমধ্যেই কলকাতার বাজারে ইলিশ আসতে শুরু করে দিয়েছে। পুজোর আগেই বাঙালির মুখে পরিতৃপ্তির হাসি ফোটাবে মাছের রাজা ইলিশ। তবে সকলেই যে এই ইলিশ খেতে পারবেন, এনটা কিন্তু নয়। যদিও এই মাছের গুণাগুণ একাধিক। আসুন জেনে নিই পুজোর সময় কাদের পাতে ইলিশ একেবারেই পড়বে না।
কোলেস্টেরল-কিডনির সমস্যা
পুষ্টিবিদদের মতে, কোলেস্টেরল অতিরিক্ত হাই হলে একটু সমঝে খেতে হবে ইলিশ। তবে সামান্য হাই হলে পরিমিত হারে খাওয়া যেতেই পারে। এছাড়া কিডনির সমস্যা থাকলে ফসফরাস ও প্রোটিনের পরিমাণ বেশি আছে বলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে। ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলেও একেবারেই ইলিশ খাওয়া যাবে না, এমনটা নয়। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে খাওয়াই ভাল।
ডায়াবেটিস রোগী
আসলে অন্যান্য মাছের তুলনায় ইলিশে একটু বেশি পরিমাণে কোলেস্টেরল রয়েছে। তাই কোলেস্টেরল রোগীরা খুব বেশি ইলিশের দিকে ঝুঁকবেন না। মাসে ১০০ গ্রাম ইলিশ খেতে পারেন। এই তালিকায় রয়েছে ডায়াবেটিস রোগীরাও। রক্তে শর্করার মাত্রা হুহু করে বাড়তে পারে। এইচবিএ১সি লেভেল ৬.৫-এর উপরে থাকলে ইলিশ না খাওয়াই ভাল। যাঁদের এইচবিএ১সি ৬.৫ বা তার নীচে রয়েছে, তাঁরা মাসে ২০০ গ্রাম ইলিশ খেতে পারেন।
শ্বাসকষ্ট ও অ্যালার্জির সমস্যা
বেশি ইলিশ খেলে শ্বাসের সমস্যা, গায়ে গোটা বেরনো, নাক দিয়ে জল, অবিরল হাঁচি, পেটে খিঁচ ধরা, গায়ে জ্বালা-ভাব তৈরি হওয়া, ফোড়া বেরনোর মতো ঘটনা ঘটে। সামুদ্রিক মাছে বেশি হিস্টামিন থাকায় এমন অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হয়। ইলিশের রাঁধার ওপর নির্ভর করে এর গুণ। বেশি তেল-মশলা দিয়ে ইলিশ রান্না করলে নষ্ট হয়ে যায় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের গুণ। আর বেশি তেল-মশলা খাওয়া তো হার্টের রোগীদের পক্ষেও ভাল নয়। তাই সেইদিকটা খেয়াল রাখতে হবে।
তবে পুজোর মরশুমে বাঙালির পাতে ইলিশ এক টুকরো পড়লে মন্দ হয় না। খুচরো বাজারে ওপার বাংলার ইলিশের দাম কিলো প্রতি কম করে ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকা করে পড়বে। দাম অবশ্য কোথাও কোথাও এর থেকে বেশিও পড়তে পারে। পুজোর মুখে পদ্মার ইলিশের আগমনে যে ভোজনরসিক বাঙালিদের মধ্যে খুশির হওয়া বইছে, তা কিন্তু বলাই বাহুল্য।