ইলিশ খেতে পছন্দ করেন না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। শর্ষে ইলিশ, ভাপা ইলিশ, ইলিশ পাতুরি, দই ইলিশ, ইলিশের টক, ভাজা ইলিশ, ইলিশের ভর্তা, আরও কত কি! বাঙালির রান্নাঘরে ইলিশের পদের তো শেষ নেই। এই মাছ স্বাদে যেমন অতুলনীয়, তেমনি পুষ্টিতেও ভরপুর। ইলিশ মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি। এ ছাড়া পটাশিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিঙ্ক ও ক্যালসিয়ামের উৎকৃষ্ট জোগান । রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। শরীরে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের চাহিদা আমরা এ মাছ খেয়েই পূরণ করতে পারি।
এই মাছে চর্বির পরিমাণও অনেক বেশি। রয়েছে পলিআনসেচুরেটেড ও মনোআনসেচুরেটেড চর্বি। তবে এই ফ্যাট পুষ্টিকর না ক্ষতিকর এই নিয়ে দোনোমনোতায় ভোগেন অনেকেই। যদিও পুষ্টিবিদরা ইলিশ মাছের চর্বি কে ভালো চর্বি হিসেবেই বিবেচনা করেন। ১০০ গ্রামের ইলিশ মাছে প্রায় ২১.৮ গ্রাম প্রোটিনের পাশাপাশি রয়েছে উচ্চ পরিমাণ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, নায়সিন, ট্রিপ্টোফ্যান, ভিটামিন, বি ১২, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ অন্যান্য ভিটামিন ও মিনারেলস।
বোঝাই যাচ্ছে ইলিশ মাছ শরীরের জন্য খুবই উপকারী। একবার দেখে নেওয়া যাক ইলিশ মাছে থাকা উপাদানগুলি আমাদের শরীরে কীভাবে পুষ্টির জোগান দেয়
গর্ভাবস্থায় ইলিশ মাছ খাওয়া কি আদৌ উচিত?
শিশুদের ক্ষেত্রে ইলিশ মাছ পাওয়ার বুস্ট হিসেবে কাজ করে, অর্থাত্ এটি শিশুদের মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও শিশুদের মস্তিষ্কের বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও এটি সহায়ক। ইলিশ মাছে থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে তাই খুবই স্বাস্থ্যকর। এটি গর্ভাবস্থায় থাকাকালীন শিশুর বৃদ্ধি ও হাড়ের গঠনের জন্য খুবই উপকারী। তাই গর্ভাবস্থায় ইলিশ মাছ খাওয়া উপকারি। তবে ইলিশ খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক হওয়ার কথাও বলছেন বিষেষজ্ঞরা। কারণ ইলিশ মাছে রয়েছে মার্কারি। যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। যদিও ইলিশে মার্কারির পরিমাণ সামান্য। তবে বেশি খেলে গর্ভাবস্থায় শিশুর ক্ষতি করতে পারে। তাই চিকিৎসকরা গর্ভবতী মায়েদের সপ্তাহে দু'দিন ইলিশ মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।