নানা রকমের খাবারের মধ্যে ডিম সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত। পুষ্টিগুণের জন্য ডিমকে সুপারফুড বলা হয়। একটি গোটা ডিমে মুরগির সমান পুষ্টি থাকে। ডিমে কোলেস্টেরলের (Cholesterol) মাত্রা উচ্চ। তাই যাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি, তাদের ডিম না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। জানুন কোলেস্টেরলের সঙ্গে ডিমের কী সম্পর্ক এবং দিনে কটা ডিম খাওয়া নিরাপদ।
কোলেস্টেরল কী?
কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বিজাতীয়, তৈলাক্ত স্টেরয়েড যা কোষের ঝিল্লি বা (সেল মেমব্রেনে)-এ পাওয়া যায় এবং যা সব প্রাণীর রক্তে পরিবাহিত হয়। একটি সুস্থ শরীরের জন্য প্রচুর কোলেস্টেরল প্রয়োজন। কোলেস্টেরল কোষ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি স্নায়ু কোষকে রক্ষা করতে, ভিটামিন ও হরমোন তৈরি করতে কাজ করে। কোলেস্টেরল প্রধানত দুই ধরনের, ভাল কোলেস্টেরল এবং খারাপ কোলেস্টেরল। ভাল কোলেস্টেরলকে খুব ভাল মনে করা হয়, যা আমাদের শরীরে অনেক বেশি প্রয়োজন, অন্যদিকে খারাপ কোলেস্টেরলকে শরীরের জন্য খুব খারাপ বলে মনে করা হয়।
ডিম ও কোলেস্টেরলের সম্পর্ক
বেশিরভাগ মানুষই দিনে কম ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন। বিশেষ করে ডিমের হলুদ অংশকে কুসুম বলা হয়। একটি মাঝারি আকারের ডিমে ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে, যা প্রস্তাবিত দৈনিক খাওয়ার ৬২ শতাংশ। ডিমের সাদা অংশে বেশি প্রোটিন এবং কম কোলেস্টেরল পাওয়া যায়। ডিমের কুসুমে একটু বেশি কোলেস্টেরল থাকে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২ থেকে ৬ কুসুম খাওয়ার পরামর্শ দেন।
একটি গোটা ডিম খাওয়ার প্রভাব ব্যক্তি ভেদে পরিবর্তিত হয়। ৭০ শতাংশ মানুষ ডিম খেলে, তা খারাপ কোলেস্টেরলকে প্রভাবিত করে না। যেখানে ৩০ শতাংশ মানুষের মধ্যে এটি সামান্য বৃদ্ধি পায়। যাদের বড় এলডিএল কণা আছে তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কম। সেজন্য ডিম খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা কিছুটা বেড়ে গেলেও চিন্তার কিছু নেই। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৩ ডিম খাওয়া সুস্থ মানুষের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ।
ডিম ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের সঙ্গে সম্পর্কিত
কিছু গবেষণা অনুসারে, বেশি ডিম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। যদিও কিছু গবেষক বলেছেন যে ব্যক্তির খাওয়া -দাওয়া, ধূমপান এবং ব্যায়ামের অভ্যাসের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। শুধুমাত্র ডিম খেলে হৃদরোগ হতে পারে এমন কোনও প্রমাণ নেই। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ডিম খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
অন্য একটি গবেষণা অনুসারে, টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশি ডিম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীরা তিন মাস সপ্তাহে ৬ দিন প্রতিদিন ২ ডিম খেতে পারেন। এটি তাদের রক্তের লিপিডের মাত্রাকে প্রভাবিত করবে না।