রান্নাঘরে বেগুন গাছএখন অনেকেই বাড়ির রান্নাঘর বা বারান্দায় সবজি চাষ করে থাকেন। যেটা দেখতেও ভাল লাগে আবার প্রয়োজন পড়লে সেখান থেকে সবজিও নিতে পারেন আপনি। লেবু, লঙ্কা, টমেটো, কারিপাতা, উচ্ছে সহ হরেক ধরনের সবজি ফলানো যায় রান্নাঘর বা বারান্দায়। শুধু থাকতে হবে একটু জায়গা ও সঠিক নিয়ম। আজ জেনে নিন রান্নাঘরে বেগুন গাছ কীভাবে রোপণ করবেন।
বেগুন গাছ
আপনার রান্নাঘরের বাগানে বেগুন গাছ রোপণ করা সহজ এবং অল্প যত্নে ভাল ফলন দেয়। খালি জায়গা, টব বা গ্রো ব্যাগে এটি সহজেই চাষ করা যায়। বেগুন রোপণের জন্য হালকা দোআঁশ মাটি, সার তৈরি গোবর এবং ভালো সূর্যালোক প্রয়োজন হয়। বেগুন একটি সব মরশুমের গাছ, তাই এটি এমন জায়গায় রোপণ করা উচিত যেখানে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা সূর্যালোক থাকে। সঠিক প্রাথমিক প্রস্তুতির মাধ্যমে, গাছটি দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং প্রচুর ফল উৎপাদন করে, যা ঘরের জন্য তাজা শাক-সবজির উৎস।
পদ্ধতি ১
আপনার রান্নাঘরের বাগানে বেগুন রোপণ করতে, প্রথমে মাটি ভালভাবে আলগা করুন এবং জৈব সার যোগ করুন। যদি বীজ থেকে বেগুন চাষ করেন, তাহলে অঙ্কুরোদগম দ্রুত করার জন্য বীজগুলিকে ২৪ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে নরম করুন। বীজ ১ থেকে ১.৫ সেন্টিমিটার গভীরে বপন করুন এবং হালকাভাবে জল দিন। ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে গাছগুলি বের হবে, যা পরে বড় টব বা বিছানায় রোপণ করা যেতে পারে। রোপণের সময়, গাছগুলিকে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্থান দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ যাতে তাদের বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকে।
পদ্ধতি ২
বেগুনের যত্নের জন্য নিয়মিত সেচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে মাটিতে জল দেওয়া এড়িয়ে চলুন যাতে এটি ক্রমাগত আর্দ্র থাকে। অতিরিক্ত আর্দ্রতা মূল পচন এবং পোকামাকড়ের ঝুঁকি বাড়ায়। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার হালকা সেচ যথেষ্ট। গাছের চারপাশের মাটি পর্যায়ক্রমে আলগা করুন যাতে শিকড় অক্সিজেন শোষণ করতে পারে এবং দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। সূর্যালোকের অভাব গাছের বৃদ্ধি ধীর করে দেয়, তাই সর্বদা এটি একটি খোলা জায়গায় রাখুন। যদি পাতা হলুদ হতে শুরু করে, তবে গাছের অতিরিক্ত জৈব সারের প্রয়োজন হয়। বেগুন গাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ সাধারণ, তবে বাড়িতে জৈব পদ্ধতি গ্রহণ করে এটি সহজেই প্রতিরোধ করা যেতে পারে। কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিম তেল বা নিম কেক কার্যকর বলে মনে করা হয়। প্রতি ১০ থেকে ১২ দিন অন্তর নিম তেল স্প্রে করলে গাছ পাতার ছিদ্রকারী পোকামাকড়, মাইট এবং অন্যান্য রোগ থেকে রক্ষা পায়।
পদ্ধতি ৩
বেগুন গাছে সময়ে সময়ে সার দেওয়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোপণের ২০ দিন পর গাছে গোবর বা ভার্মিকম্পোস্ট প্রয়োগ করুন এবং প্রতি ১৫ দিন অন্তর পরিমাণ সামান্য বাড়ান। ফুল ফোটার সময় তরল সার প্রয়োগ করলে গাছের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং ফলন আরও বেশি এবং বড় হয়। গাছটিকে ধরে রাখার জন্য একটি ছোট কাঠের কাঠি ব্যবহার করাও গুরুত্বপূর্ণ যাতে ফল ধরার পরে ডালপালা ভেঙে না যায়। গাছের নীচে শুকনো পাতার একটি স্তর ছড়িয়ে দিলে তা আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং গাছকে দীর্ঘ সময় ধরে সুস্থ রাখে।
পদ্ধতি ৪
বাড়িতে বেগুন চাষের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল আপনি বিশুদ্ধ, তাজা সবজি পান, রাসায়নিক বা কীটনাশক মুক্ত। বেগুন ভিটামিন, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি সবজি, যা হজমশক্তি উন্নত করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।