
দুর্গাপুজোর কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। দেবী আরাধনার অন্য়তম অংশ হল পদ্ম ফুল। শরত্কালে গ্রামেগঞ্জে দিঘি পদ্মে ভরে যায়। প্রকৃতির সেই অপরূপ সৌন্দর্য্যের কোনও তুলনা হয় না।
তবে আপনি কি জানেন, চাইলে আপনার বাড়িতেও পদ্ম ফুল ফোটাতে পারেন। প্রচুর জলের প্রয়োজন নেই। বাড়িতে মাঝারি থেকে বড় আকারের গামলাতেই পদ্ম গাছ করা সম্ভব। সেই পদ্ম গাছের পাতা-ই অনেক আকর্ষণীয়। আর সেই সঙ্গে ফুল ফুটলে তো কথাই নেই। আপনার বাগানে সবার নজর কাড়বে এই গাছ।
আসুন এক নজরে জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে বাড়িতে পদ্মফুল ফোটাবেন
দশকর্মার দোকানে পদ্মের বীজ পাওয়া যায়। সেই বীজ থেকে গাছ করা যায়। বীজের মুখ চেঁচে তা জলে ভিজিয়ে রাখতে হয়। এরপর তার থেকে কল বের হয়। এটি দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার।
তাছাড়া এই পদ্ধতিতে যে জাতের পদ্ম হয়, তার গাছ অনেকটাই বড়। ফলে অনেক বড় গামলা বা চৌবাচ্চায় করলে, তবেই এই পদ্ধতিতে করবেন। কিন্তু আপনার গামলা ছোট হলে অন্য় পন্থা নিতে হবে।
বর্তমানে বেশিরভাগ ভাল নার্সারিতেই পদ্মের চারা পাওয়া যায়। বিভিন্ন ভ্যারাইটি, হাইব্রিড, রঙের পদ্ম চারা পাবেন। সেটি কিনে এনে বসালে বিষয়টি অনেক সহজ হবে।
কীভাবে বসাবেন?
বসানোর নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। তার আগে বুঝতে হবে, ঠিক কীভাবে পুকুর-দিঘিতে পদ্মফুল হয়। পদ্ম গাছের গোড়া জলের তলায় থাকা মাটির ভিতরে থাকে। সেখানেই শিকড় বিস্তার করে। এদিকে গাছের পাতা জলের উপরে ভেসে থাকে। বাড়িতে এই পরিবেশই সৃষ্টি করতে হবে।
১. প্রথমে একটি মাঝারি থেকে বড় গামলা নিন। গামলা আকৃতির বড় মাটির টবও নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে সিমেন্ট দিয়ে টবের গর্ত বুজিয়ে নিতে হবে।
২. এরপর মাটির পালা। নার্সারি থেকে ভাল, উর্বর মাটি কিনুন। গামলার তিন-চতূর্থাংশ জুড়ে মাটি ভরুন।
৩. এবার ধীরে ধীরে জল ভরতে শুরু করুন। জলের বেগ খুব ধীর রাখবেন। সম্পূর্ণ কানায়-কানায় জল ভরুন।
৪. এবার ২-৩ ঘণ্টা এভাবেই রেখে দিন। জল থিতিয়ে গেলে তারপর পদ্মের চারা পুঁততে শুরু করুন।
কীভাবে যত্ন নেবেন?
১. প্রথম ২ দিন আংশিক রোদে রাখবেন। তবে তারপর থেকে রোজ অন্তত ৬-৭ ঘণ্টা সরাসরি কড়া রোদ লাগে, এমন জায়গায় গামলাটি রাখবেন।
২. ২-৩ দিন অন্তর গামলার জল বদলাবেন। গামলা কাত করে বেশিরভাগ জল ফেলে দেবেন। তারপর ফের ধীরে ধীরে কানা পর্যন্ত জল ভরবেন। নিয়মিত জল বদলালে তা গাছের পক্ষে ভাল। তাছাড়া জমা জলে মশার সমস্যাও হবে না।
৩. বড় গামলায় গাছ করলে ২-৩টি গাপ্পি, গাম্বুসিয়া মাছ ছাড়তে পারেন। দেখতেও মজা লাগবে। জমা জলে মশাও হবে না।
এরপর ধৈর্য্যের পালা। গাছ বড় হয়ে ফুল আসতে ২-৩ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তাই অধৈর্য্য হবেন না। যত্ন নিতে থাকুন।