ঢেঁকুর বা হেঁচকি সাধারণত আমাদের দৈনন্দিন সহজাত সমস্যা। তবে যেখানে সেখানে ঢেঁকুর তোলাকে সাধারণত কটু চোখেই দেখা হয়। আবার এমনও সংস্কৃতি রয়েছে যেখানে খাবারের পর ঢেঁকুর তোলাকে সুস্বাদু খাবার ও পেটপুরে খাওয়ার লক্ষণ হিসাবে দেখা হয়। তবে মাঝে মাঝে বিকট শব্দে ঢেঁকুর তোলা দারুণ অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে। তাই জেনে নিন ঢেঁকুর উঠলে কী করণীয়।
আসলে পেটের ভেতরে জমে যাওয়া বাতাস বের করে দেওয়ার একটি পদ্ধতি হল ঢেঁকুর। যার দুটি প্রধান কারণ হল খাওয়ার সময় বেশি বাতাস গিলে ফেলা কিংবা হজমের সমস্যা। কারণ যাই হোক, জমে যাওয়া বাড়তি গ্যাস থেকে পেট ব্যথা হতে পারে। মাঝে মধ্যে ঢেঁকুর ওঠা ভালো তবে নিয়মিত হলে হজমের সমস্যা থাকার আশঙ্কা আছে। তবে বার বার ঢেঁকুর তোলা ঠেকাতে রয়েছে প্রাকৃতিক উপায়।
আরও পড়ুন: এই শাক খেলেই কমবে ওজন, বাড়বে দৃষ্টিশক্তিও
পুদিনা পাতা
এতে থাকা ‘অ্যান্টিস্পাসমোডিক’ উপাদান হজমনালীকে শিথিল করে, যা পেটে গ্যাস সৃষ্টির আশঙ্কা কমায়। পাশাপাশি যকৃতের পাচক রস উন্নত করতে এবং হজমশক্তি বাড়াতেও এটি সহায়ক।
খাওয়ার পদ্ধতি: এক চা-চামচ শুকনা পুদিনা পাতা এক কাপ গরম জলে ১০ মিনিট রেখে দিন। প্রতিদিন তিন থেকে চারবার এই জল খান।
দই
একটি ‘প্রোবায়োটিক’ যা অন্ত্রে ব্যাক্টিরিয়ার পরিমাণের ভারসাম্য বজায় রাখে। ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণের ভারসাম্য নষ্টই পেটে গ্যাস হওয়ার এবং ঢেকুর ওঠার একটি কারণ। ‘প্রোবায়োটিক’ খাবারগুলো হজমের বিভিন্ন সমস্যা যেমন, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, পেট ফোলা ইত্যাদি দূর করতেও সহায়ক।
খাওয়ার পদ্ধতি: প্রতিদিনে কমপক্ষে একবার খাওয়ার পর দই খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
আরও পড়ুন: হাইপারটেনশন আপনাকে নিঃশব্দে 'খুন' করছে, ৫ খাবার বাঁচাতে পারে...
ক্যামোমাইল চা
পেটে জমা হওয়া গ্যাস ঢেঁকুরের পরিবর্তে শারীরিক নিয়মে বের হতে সাহায্য করে ক্যামোমাইল চা। পেট ব্যথা কমাতেই সহায়ক এটি।
খাওয়ার পদ্ধতি: উপকার পেতে প্রতিদিন দুতিন কাপ ক্যামোমাইল চা খেতে পারেন।
এলাচ
হজমে সহায়ক রসের পরিমাণ বাড়ায় এলাচ। ফলে গ্যাস হওয়ার আশঙ্কা কমে। এলাচে থাকা ‘কারমিনেটিভ’ উপাদান হজমে সহায়তা করে এবং পেট ফোলা রোধ করে।
আরও পড়ুন: ডায়াবেটিস থেকে ক্যান্সার, এই সবজির বীজেই কন্ট্রোলে থাকবে সব জাঁদরেল রোগ!
খাওয়ার পদ্ধতি: উপকার পেতে কয়েকটি আস্ত এলাচ চিবিয়ে খেতে পারেন, প্রতিদিন দুতিন বার।
মৌরি
এতেও থাকে ‘কারমিনেটিভ’ উপাদান, যা হজমনালী নরম রাখে এবং গ্যাস জমা রোধ করে। বুক জ্বালাপোড়া, পেট ফোলা, বদহজম রোধ করতেও উপকারী এটি।
খাওয়ার পদ্ধতি: আধা চা-চামচ মৌরিবীজ ভেজে খাওয়ার পর খেতে পারেন।
হাঁটাচলা করুন
এছাড়াও খাওয়া-দাওয়ার পর একটু হাঁটাচলা করুন। মাত্র ১০ মিনিট হাঁটলেই আপনার পাকস্থলী বায়ুশূন্য হয়ে যাবে।
খাবার চিবিয়ে খান
যারা দ্রুত খায় তারা সাধারণত খাবার চিবিয়ে খায় না। খাবার না চিবিয়ে খেলে খাবারের ফাঁকে বাতাস ঢুকে খাদ্যনালীতে আটকে যেতে পারে। এর ফলাফল হিসাবে বিরক্তিকর ঢেঁকুর। তাই গিলে না খেয়ে চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন।