প্রতীকী ছবি সোয়েটার, কম্বলের ভিতর থেকে বেরিয়ে কনকনে ঠান্ডায় রোজ রোজ স্নান করার কথা ভাবলেই যেন গায়ে জ্বর আসে। অনেকেই এই ডিসেম্বরে স্নান স্কিপ করছেন। কেউ কেউ আবার বাথরুমে গিয়ে গায়ে না ঢেলে মগের জল মাটিয়ে ঢেলেই স্নানের 'নাটক' করছেন। দু'এক ফোঁটা গায়ে জল ছেটানো মানেই শীতের স্নান কমপ্লিট। ঠান্ডায় যবুথবু বাঙালির অধিকাংশের মতই তাই। সত্যিই কি শীতকালে রোজ স্নান করা বাধ্যতামূলক? নাকি এক আধ দিন স্নান বন্ধ রাখলেও ক্ষতি নেই? কী বলছেন চিকিৎসকরা?
বাবা-মায়ের থেকে বকুনি খাওয়ার ভয়ে অনেক সময়েই কাঁপতে কাঁপতে হলেও স্নান সেরে ফেলতে হয় শীতের সকালে। কিন্তু এই হাড়কাঁপানো শীতে কি রোজ স্নান করা আদৌ বিজ্ঞানসম্মত? চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এই নিয়ে ভিন্নতম রয়েছে।
শীতে রোজ স্নান করা উচিত?
অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করেন, শীতকালে প্রতিদিন স্নান করা জরুরি নয়। এর পিছনে অনেকগুলি বৈজ্ঞানিক কারণও রয়েছে।
ন্যাচারাল অয়েল
আমাদের ত্বকে ন্যাচারাল অয়েলের একটি প্রতিরক্ষামূলক স্তর থাকে। যা ত্বককে আর্দ্র এবং কোমল রাখে। শীতের ঠান্ডা বাতাস ইতিমধ্যেই শুষ্ক। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঘন ঘন গরম জল এবং সাবান ব্যবহারের ফলে এই ন্যাচারাল অয়েল স্তর নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে ত্বক ফাটা, চুলকানির এবং এগজিমার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
ভাল ব্যাকটেরিয়া
আমাদের ত্বকে গুড ব্যাকটরিয়া থাকে যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন স্নান এবং স্ক্রাবিং এই প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলে।
জলের তাপমাত্রা এবং সময়
আপনি স্নান করলেও দীর্ঘক্ষণ গরম জলের নীচে থাকা ক্ষতিকারক হতে পারে। ডাক্তারদের মতে, শীতকালে হাল্কা গরম জলে ৫-১০ মিনিট স্নানই যথেষ্ট।
স্নান কি একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত?
এমন নয় যে পরিচ্ছন্নতা ছেড়ে দেওয়া উচিত। চারপাশে দূষিত এবং ধুলোবালি পূর্ণ অবস্থার মধ্যে পরিচ্ছন্নতাও অপরিহার্য। প্রতিদিন সম্পূর্ণরূপে স্নান না করতে চাইলে শরীরের সেই জায়গাগুলি পরিষ্কার করুন যেখানে ঘাম হচ্ছে এবং ব্যাকটেরিয়া প্রবেশের প্রবণতা বেশি থাকে।
প্রতিদিনের নিয়ম
শীতকালে তেল মেখে প্রতিদিন একবার করে স্নান করা আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য ভাল অভ্যাস।
আসলে শীতকালে প্রতিদিন স্নান করা আপনার পছন্দের চেয়েও আপনার স্বাস্থ্যের উপর বেশি নির্ভর করে। যদি আপনার ত্বক খুব শুষ্ক হয় তাহলে প্রতিদিন স্নানের অভ্যাস ত্যাগ করাই ভাল।