হিন্দুদের গুরুত্বপূর্ণ উৎসবগুলির মধ্যে জন্মাষ্টমী অন্যতম। এই বছর শনিবার, ১৬ অগাস্ট গোটা দেশে কৃষ্ণের জন্মোৎসব পালন করা হবে। শ্রী কৃষ্ণের আরাধনায় মেতে ওঠেন দেশবাসী। বৃন্দাবন-মথুরাতে চলে বিশেষ উৎসব। জন্মাষ্টমী শুধু একটি উৎসব নয়, বরং ভক্তি, খুশী ও পরম্পরার এক সুন্দর মেলবন্ধন। এইদিন কৃষ্ণের জন্মদিন পালন করা হয়। নাড়ু গোপালকে এদিন তাঁর প্রিয় ভোগ নিবেদন করেন ভক্তেরা। জন্মাষ্টমীর দিন শ্রী কৃষ্ণকে ৫৬ ধরনের ভোগ নিবেদন করা হলেও গোপালের প্রিয় কিছু মিষ্টি রয়েছে। আসুন জেনে নিন কোন কোন মিষ্টি ভোগে দিলে সন্তুষ্ট হবেন গোপাল।
পঞ্চামৃত
ভগবান কৃষ্ণের সবচেয়ে পছন্দের ভোগ হল পঞ্চামৃত, যা তৈরি করতে আপনাকে গ্যাস জ্বালাতে হবে না। পঞ্চ ও অমৃত এই দুই শব্দের মিলে পঞ্চামৃত। পঞ্চ অর্থাৎ পাঁচ ও অমৃতের অর্থ অমরত্ব পাওয়ার পানীয়। এই জন্মাষ্টমীতে এভাবে বানিয়ে ফেলুন পঞ্চামৃত।
উপকরণ
দই ২ বড় চামচ
দুধ হাফ কাপ
শুদ্ধ ঘি ১/৪ বড় চামচ
মধু বড় হাফ চামচ
চিনি বড় হাফ চামচ
পদ্ধতি
একটি পরিষ্কার পাত্রে সব উপকরণ দিয়ে মেশাতে থাকুন। ততক্ষণ মেশান যতক্ষণ না তা ভাল করে মিশছে। তুলসী পাতা এতে দিয়ে শ্রী কৃষ্ণকে নিবেদন করুন।
মাখন মিশ্রি
শ্রী কৃষ্ণের মাখন কতটা প্রিয় এটা অজানা কারোর নয়। কৃষ্ণের মাখন এতটাই প্রিয় ছিল যে তিনি তা চুরি করেও খেতেন। এই কারণে তাঁকে মাখন চোরও বলা হত। তাই জন্মাষ্টমীতে সবচেয়ে বিশেষ ভোগ হল মাখন মিশ্রি।
উপকরণ
টাটকা দুধের সর
জল
বরফ
মিশ্রি
পদ্ধতি
২ কাপ মতো তাজা দুধের সর নিন। এতে একটু একটু করে জল দিয়ে ফেটাতে থাকুন। এবার এতে ৪-৫টা বরফের টুকরো দিয়ে ফেটান, যতক্ষণ না মাখন জল থেকে আলাদা হচ্ছে। আস্তে করে মাখন বের করে একটা বাটিতে রাখুন আর এতে মিশ্রি দিয়ে হালকা করে মিশিয়ে নিন। আপনার মাখন মিশ্রি প্রসাদের জন্য প্রস্তুত।
মাওয়া ক্ষীর বা খোয়া ক্ষীর
এই ক্ষীর সাধারণত বাড়িতে হয় না। চালের পায়েসের থেকে এই ক্ষীর একেবারেই আলাদা। মাওয়া ক্ষীর বেশি ঘন, সরে ভরা ও স্বাদে দারুণ হয়। এটা মাওয়া বা খোয়া দিয়ে বানানো হয়। জন্মাষ্টমীতে এই মাওয়া বা খোয়া ক্ষীর শ্রীকৃষ্ণের খুবই পছন্দের।
উপকরণ
বাসমতি চাল
খোয়া ক্ষীর
দুধ
কেশর
চিনি
ঘি
এলাচ পাউডার
আমন্ড-পেস্তা
পদ্ধতি
বাসমতি চাল ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখুন। একটা ভারী পাত্রে ঘি গরম করে এতে গ্রেট করা খোয়া দিয়ে গলিয়ে নিয়ে গাঢ় মিশ্রন বানান। এতে চাল দিয়ে কিছু মিনিট হালকা নাড়াচাড়া করুন। একটা ছোট পাত্রে দুধ গরম করে এতে কেশর দিন। সরিয়ে রাখুন কেশর দুধ। বাকি দুধ ও চিনি খোয়া-চালের মিশ্রণে ঢেলে দিন। এটা ফুটতে দিন, এবার ঢিমে আঁচে রাখুন আর ৩০ মিনিট পর্যন্ত ফোটান। মাঝে মাঝে নাড়াতে থাকুন, যাতে নীচে লেগে না যায়। দুধ হালকা গোলাপি না হওয়া পর্যন্ত ও চাল সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত ফোটাতে থাকুন। এবার এতে কেশর দুধ দিন, ওপর থেকে এলাচ গুঁড়ো ছড়িয়ে দিন। চাইলে আমন্ড ও পেস্তা কুচিও দিতে পারেন। ঠান্ডা অথবা গরম যেমন ইচ্ছে নিবেদন করুন আদরের গোপালকে।